ইউএনএফপিএর বার্ষিক প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপনের সময় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পপুলেশন কাউন্সিলের এ দেশীয় প্রতিনিধি ওবায়দুর রব বলেন, প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ শিশুর জন্ম হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিবছর শিশুসহ প্রায় ১০ লাখ লোক মারা যাচ্ছে। মৃত্যুর পর প্রতিবছর ২০ লাখ লোক জনসংখ্যার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই অবস্থা আরও প্রায় ৪০ বছর চলবে। এরপর জন্ম ও মৃত্যুর সংখ্যা সমান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের পরিসংখ্যান তুলে ধরে ওবায়দুর রব বলেন, প্রতিবছর দেশে ১০ থেকে ১২ লাখ বিয়ে হয়। এর মধ্যে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার কিশোরীর বিয়ে হয় বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগেই।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে ৬৬ শতাংশ নারীর বিয়ে হয় কিশোরী বয়সে।
ইউএনএফপিএর এ দেশীয় প্রধান কর্মকর্তা প্রনচাই সুচিতা বলেন, ইউএনএফপিএ জনসংখ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে প্রতিপাদ্য করে বিশ্ব জনসংখ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০১৩ সালের প্রতিবেদনের বিষয় ‘কৈশোরে মাতৃত্ব’। তিনি বলেন, কিশোরী বয়সে মা হওয়া সারা পৃথিবীরই সমস্যা। এশিয়ার মধ্যে কিশোরী গর্ভধারণের হার বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি।
১১৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী কৈশোরে মাতৃত্বের বোঝা, মাতৃত্বের কারণে কিশোরীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি, শিক্ষা ও উৎপাদনশীলতার ওপর এর প্রভাব, কিশোরীদের রক্ষায় পৃথিবীর কোথায় উল্লেখযোগ্য কী কাজ হচ্ছে, করণীয় বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা পৃথিবীতে বছরে ৭০ হাজার কিশোরী মারা যায় গর্ভধারণ ও প্রসবজনিত জটিলতায়। ওবায়দুর রব বলেন, বাংলাদেশে এই সংখ্যা দুই হাজার।
‘কৈশোরে মাতৃত্ব: কৈশোরে গর্ভধারণ, প্রতিবন্ধকতা ও তা প্রতিরোধ’ শিরোনামে প্রতিবেদনের শুরুতে ইউএনএফপিএর নির্বাহী পরিচালক বাবাটুন্ডে অসোতিমেহিন বলেছেন, যখন একজন কিশোরী গর্ভবতী হয়, তখন নাটকীয়ভাবে তার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বদলে যায়, ভালো কিছু দুর্লভ হয়ে পড়ে। তার শিক্ষাজীবন শেষ হয়ে যেতে পারে, তার কাজের সম্ভাবনা উবে যায়। ওই কিশোরীর দারিদ্র্য, বাদ পড়া ও পরনির্ভরশীলতার ঝুঁকি বহু গুণে বেড়ে যায়।


No comments:
Post a Comment
Thank you very much.