একটু পরই অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলরকে নিয়ে উইকেট দেখলেন কোচ স্টিভেন ম্যাঙ্গোঙ্গো। যা দেখলেন তাতে তাঁদের বেশ শঙ্কিত হয়ে পড়ারই কথা। উইকেট জিম্বাবুয়ের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াবে, এমনটা তাঁরা অবশ্যই ভাবেননি। তবে ঢাকার মতো উইকেটে খানিকটা গতি আর বাউন্স পাওয়ার আশা হয়তো ছিল মনের কোণে। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে টেলর মুখ কালো করে বললেন, ‘উইকেট ঢাকার মতো হবে না। মনে হয় না অতটা বাউন্স এখানে মিলবে। আমাদের পেসারদের কাজটা কঠিনই হবে এখানে। বল স্পিন করবে অনেক, কিন্তু বাউন্স থাকবে না।’
টেলরদের শঙ্কাটাই মুশফিকদের তৃপ্তি। অবশেষে দেশের মাটিতে পাওয়া যাচ্ছে ‘দেশি’ উইকেট! ঘরের মাটির সিরিজেও বাংলাদেশ বেশির ভাগ সময় মনের মতো উইকেট পাওয়া যায় না বলে বরাবরই আক্ষেপ করে। বেশির ভাগ সময় যদিও বাংলাদেশের শক্তির জায়গাটা নির্ধারণ করাই ছিল বড় সমস্যা। দেখা যেত বাংলাদেশের শক্তির জায়গাটায় প্রতিপক্ষ আরও বেশি শক্তিশালী। এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। জিম্বাবুয়ে স্পিনে দুর্বল, তাদের স্পিন আক্রমণও খুব ভালো নয়। মিরপুরে প্রথম টেস্টের উইকেটে স্পিন ধরেছে, টার্ন মিলেছে। তবে একসঙ্গে খানিকটা গতিময় ও বাউন্সিও ছিল উইকেট। বাংলাদেশের স্পিনে যেমন জিম্বাবুয়ে শেষ হয়েছে, জিম্বাবুয়ের পেসাররাও তেমনি দারুণ ভুগিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু খুলনার উইকেট যে বার্তা দিচ্ছে তাতে ম্যাচের সমীকরণে পেসারদের ভূমিকা থাকার কথা সামান্যই। উইকেট হওয়ার কথা মন্থর, বল আসতে পারে নিচু হয়ে। টার্নও মেলার কথা যথেষ্টই।
মনের মতো উইকেট পাওয়ার তৃপ্তি তাই মুশফিকের কণ্ঠে, ‘খুলনার উইকেট মিরপুর থেকে পুরো আলাদা। মিরপুরের মতো পেস, বাউন্স পাওয়া যাবে না। মুভমেন্ট হবে না। দিন যত যাবে উইকেট থেকে তত বেশি টার্ন মিলবে, নিচুও হবে। সেটা আমাদের পক্ষে থাকবে। যদি টসে জিতি এবং দেড়-দুই দিন ভালো ব্যাটিং করতে পারি তাহলে ওদের অনেক চাপে ফেলতে পারব। এমনকি টসে হারলেও এই উইকেটে স্পিন খেলা ওদের জন্যে অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। ’
উইকেট নিয়ে পূর্বানুমান অনেক সময়ই বিপজ্জনক। চেহারা দেখে চরিত্র নিয়ে ধোঁকা খাওয়ার নজির কম নেই ক্রিকেট ইতিহাসে। তবে এখানে সেই শঙ্কা সামান্যই। উইকেট দেখে মুশফিকের মুখে যে হাসিটা ফুটেছে, ম্যাচ শেষ হতে হতে সেটা আরও চওড়া হওয়ার কথা।


No comments:
Post a Comment
Thank you very much.