Thursday, June 18

প্রতিপক্ষ যখন ভারত

মাশরাফি-তামিম, সাকিব-মুশফিকও

তারেক মাহমুদ      |    তারুণ্যের কন্ঠস্বর




আবার ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে। আবারও মাশরাফি বিন মুর্তজা, আবারও তামিম ইকবাল। সবার চিন্তায় এই স্রোতটাই বয়ে যাওয়ার কথা এখন। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের তিন জয়ের দুটিতেই ম্যান অব দ্য ম্যাচ মাশরাফি। আর তামিম তো ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথম সাক্ষাতেই হইচই ফেলে দিয়েছিলেন ক্রিকেট-বিশ্বে। ভারত মানেই তাই তামিম-মাশরাফির দিকে তাকিয়ে থাকা। ভারত মানেই এই দুজনকে ঘিরে প্রত্যাশার বেলুন ফোলানো।
কিন্তু বাস্তবে ভারতের সামনে তামিম যতটা উজ্জ্বল, মাশরাফিও কি তাই? কিংবা তামিম-মাশরাফির সঙ্গে আর কেউ কি নেই, ভারতের সঙ্গে খেলার আগে যাঁর অতীতটাও হতে পারে বাংলাদেশ দলের প্রেরণা? সাকিব আল হাসানের কথাটা এখানে বলাই যায়। আসতে পারেন মুশফিকুর রহিমও। ৩১ বলে ৪৯ রান করে ২০১২ এশিয়া কাপের জয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন সাকিব। ওই ম্যাচে উইকেটশূন্য থাকলেও ভারতের বিপক্ষে ১২ ওয়ানডেতে সাকিবের উইকেট ১৪টি, যা ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ। গড়ে রান দিয়েছেন ৩৭.৩৫ করে। আর ব্যাট হাতে রান ৩৩.৬৩ গড়ে ৩৭০। আর মুশফিক তো ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রানই করে বসে আছেন। তবু সাকিব-মুশফিককে নিয়ে ভারত ম্যাচের আগে ততটা মাতামাতি হয় না, যতটা মাশরাফি-তামিমকে নিয়ে হয়।
প্রতিবেশী এই দলটার বিপক্ষে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স তেমন উজ্জ্বল না হলেও মাশরাফির নামটা ভারতের বিপক্ষে জয়ের সমার্থক হয়ে গেছে প্রথম দিকের দুটি ম্যাচের পারফরম্যান্সের কারণেই। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রথম ভারতের মুখোমুখি হলেন এবং তাতেই জয়ের নায়ক মাশরাফি। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৩১ রান, বল হাতে ৩৬ রানে ২ উইকেট।
২০০৭ বিশ্বকাপে আবারও ভারতের মুখোমুখি মাশরাফি। পোর্ট অব স্পেনে ৩৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে আরও একবার ম্যাচসেরা ভারতের বিপক্ষে জয়ে। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এই দলের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেটও (১৬) তাঁরই। কিন্তু এই ১৬ উইকেটের ৬টিই প্রথম তিন ম্যাচে। ভারতের বিপক্ষে এরপর আর বল হাতে খুব একটা ভালো সময় আসেনি মাশরাফির। আট বছর আগে বিশ্বকাপের ওই ম্যাচের পর ভারতের বিপক্ষে গত ১০ ম্যাচে ৪২.৪০ গড়ে উইকেট মাত্র ১০টি। ওভারপ্রতি রান ৫.০৬। সেরা সাফল্য ৩৫ রানে ২ উইকেট।
মাশরাফি নিজেও তাই ভারতের বিপক্ষে অতীতটাকে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে রাজি নন। কাল সিরিজ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তাঁর কথাতেই পরিষ্কার হয়ে গেল তা, ‘অনেক সময় অনেকে চিন্তা করে, আমি ওদের বিপক্ষে ভালো খেলি। কিন্তু আমি এটা থেকে তেমন একটা আত্মবিশ্বাস পাই না। এটা আমাকে কখনোই অনুপ্রাণিত করে না।’ মাশরাফির ধারণা, এসব জিনিস মাঠে তেমন কাজেও লাগে না। প্রতিটা ম্যাচেই নতুন করে শুরু করতে হয় এবং সেই শুরুটা ভালো হওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাঁর কাছে।
মাশরাফির তুলনায় ভারতের বিপক্ষে তামিমের সাফল্যই বেশি চোখে পড়ার মতো। পোর্ট অব স্পেনে ২০০৭ বিশ্বকাপের ওই ম্যাচেই মারকাটারি ব্যাটিংয়ে প্রথম চেনালেন নিজেকে। এরপরও ভারতের বিপক্ষে মোটামুটি নিয়মিতই জ্বলে উঠেছে তার ব্যাট। ১৪ ম্যাচে ৩২.৭৬ গড়ে ৪২৬ রান, সেঞ্চুরি না থাকলেও ফিফটি আছে ৫টি। অবশ্য রানের কথাই যদি বলেন, মুশফিকুর রহিমের নামই আগে বলা উচিত। ১৫ ম্যাচ খেলে ৪০.৭২ গড়ে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ (৪৪৮) ওয়ানডে রান যে তাঁরই!
ভারতের বিপক্ষে আরও একটা সিরিজের আগে কৌতূহলটা তাই জাগছেই। নায়কের চরিত্রে এবার দেখা যাবে কাকে? মাশরাফি, তামিম, সাকিব, মুশফিক নাকি নতুন কোনো মুখ?