মরুভূমি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে বালুর ধু ধু প্রান্তর। প্রাণের ছোঁয়া নেই। কেমন যেন নিষ্ঠুর ধরনের শুষ্ক। কিন্তু এমন একটা জায়গায় যখন হঠাৎ করে ফুল ফোটে, তখন অবাক না হয়ে উপায় আছে!
ঘটনাটি ঘটেছে চিলির আতাকামা মরুভূমিতে। এটি পৃথিবীর অন্যতম শুষ্ক মরুভূমি হিসেবে পরিচিত। মে মাসে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ভারী মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়। তখন সৃষ্টি হয় প্রবল বন্যার। আর এই বৃষ্টিই জন্ম দেয় অপূর্ব সুন্দর এক দৃশ্যের।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, আতাকামা মরুভূমির একটি অংশ গোলাপি রঙের বুনো ফুলে ছেয়ে গেছে। দেখে মনে হয়, কেউ যেন গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন। পৃথিবীর তিনটি মরুভূমির মাত্র একটিতে প্রকৃতির লীলায় ফুল ফোটে। তাও প্রতিবছর নয়; পাঁচ থেকে সাত বছর ব্যবধানে।
![]() |
আতাকামার ৬০০ মাইলেরও বেশি এলাকা গোলাপি রঙের বুনোফুলে ছেয়ে গেছে। দেখে মনে হয়, কেউ যেন গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন। ছবি: এএফপি |
২০১৫ সালে এই মরুভূমিতে সর্বশেষ এমন ফুলের গালিচা দেখা গিয়েছিল। সে হিসাবে আরও কয়েক বছর পর এমন দৃশ্য দেখার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই মরুভূমিটি ছেয়ে গেছে সুন্দর ফুলে।
চিলির উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত আতাকামা পৃথিবীর দীর্ঘতম শুষ্ক মরুভূমি। গত শতাব্দীর শুরুর দিকে টানা ১৪ বছরেরও বেশি সময় এই মরুভূমিতে এক ফোঁটা বৃষ্টিও হয়নি। এখানে এমন অনেক অংশ আছে, যেখানে কোনো দিন এক ফোঁটা বৃষ্টিও হয়নি। এ যেন পানিশূন্য মঙ্গল গ্রহের বাস্তব উদাহরণ! এই বৈশিষ্ট্যের কারণে অবশ্য মঙ্গলগ্রহকে উপজীব্য করে বানানো সিনেমার শুটিং হয় এখানে। আবার নাসাও তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মরুভূমিটি ব্যবহার করে।
দুই বছর আগে যখন এখানে ফুল ফুটেছিল, তখন একদিন এক ইঞ্চিরও কম বৃষ্টি হয়েছিল। আর তাতেই ফুলের হাসি ফুটেছিল শুষ্ক মরুভূমিতে।
এবার আতাকামার ৬০০ মাইলেরও বেশি এলাকাজুড়ে ফুল ফুটেছে। মরুর বুকে ফুলের সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই এখন চিলি যাচ্ছেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও বাহারি ফুল ফুটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নভেম্বরের পর থেকে ফুলের গালিচার আকারটি কমতে থাকবে।
সূত্রঃ প্রথম আলো
No comments:
Post a Comment
Thank you very much.