ভারতের মহাকাশযান গতকাল বুধবার সকালে সফলভাবে মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে প্রবেশ করে ‘ইতিহাস সৃষ্টি করেছে’ বলে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোতে জানানো হয়েছে। এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (আইএসআরও) অভিযান নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে এ ঘোষণা দেন।
ছয় মাস ধরে মঙ্গলকে প্রদক্ষিণ করে সংগ্রহ করা তথ্য ভূমিতে স্থাপিত কেন্দ্রে পাঠাবে মঙ্গলযান নামের এ রোবোটিক স্যাটেলাইটটি। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল নিয়েও পরীক্ষা চালাবে এটি।
দ্য হিন্দুর এক খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলগ্রহের ভূপৃষ্ঠের ১০টি ছবি পাঠিয়েছে মঙ্গলযান, যাতে মঙ্গলের বিভিন্ন গর্ত দেখা যাচ্ছে। এ ছবিগুলোর মানও ভালো।
এর আগে মঙ্গলযান কক্ষপথে প্রবেশের সাফল্য প্রসঙ্গে মোদি বলেছিলেন, ‘ভারত সফলভাবে মঙ্গলে পৌঁছেছে। সবাইকে অভিনন্দন। অভিনন্দন পুরো দেশকে। আজ ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে।’
মোদি উল্লেখ করেন, প্রায় অসম্ভবকে অর্জন করেছে ভারত। বিশ্বে ৫১টি অভিযানের মধ্যে মাত্র ২১টি সফল হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভারত প্রথমবারেই সফলতা পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউরোপ সফলভাবে মঙ্গলে মহাকাশযান পাঠিয়েছে।
মঙ্গলযানের সঙ্গী ম্যাভেন
মঙ্গলযান বুধবার মঙ্গলগ্রহের কক্ষপথে প্রবেশ করার আগে সোমবার সেখানে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নাসার তৈরি ম্যাভেন নভোযানটি। অবশ্য ম্যাভেন তৈরিতে খরচ পড়েছে মঙ্গলযানের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল নিয়ে গবেষণার জন্য এই নভোযানটি বিশেষভাবে তৈরি করেছে নাসা। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠানটির গবেষকেরা বলেন, লাল রঙের গ্রহের বায়ুমণ্ডল নিয়ে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে মার্স অ্যাটমোসফিয়ার অ্যান্ড ভোলাটাইল ইভোলিউশন ক্রাফট বা ম্যাভেন। প্রাচীনকালে মঙ্গল উর্বর ছিল বলে ধারণা করা হয়। হঠাৎ করে মঙ্গলে কীভাবে পরিবর্তন এল এই অজানা তথ্য অনুসন্ধান করবেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলের জলবায়ু, পানি বা ভবিষ্যতে এখানে বসবাস উপযোগী পরিবেশের সন্ধানে মঙ্গলের অতীত ইতিহাস খোঁজার জন্য প্রথমবারের মতো মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে গবেষণার জন্য ম্যাভেনকে পাঠানো হয়েছে। ম্যাভেনের পাশাপাশি কাজ করবে মঙ্গলযান। নাসার প্ল্যানেটারি সায়েন্স বিভাগের পরিচালক জিম গ্রিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত মঙ্গলগ্রহ থেকে তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে পরস্পরকে সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছে।


No comments:
Post a Comment
Thank you very much.