এই ম্যাচে সেঞ্চুরিও পেয়েছেন। একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট! বিস্মিত হতেই হবে। টেস্ট ক্রিকেটের ১৩৭ বছরের বুড়ো ইতিহাসে এমন অর্জন যে আছে মাত্র দুজনের। সেই দুজনও এমন, ক্রিকেট ইতিহাস যাঁদের নামে শ্রদ্ধাবনত হয়ে ওঠে। একজন ইয়ান বোথাম, অন্যজন ইমরান খান।
প্রথম নজিরটা বোথামই গড়েছিলেন। ১৯৮০ সালে খুবই অগুরুত্বপূর্ণ একটা ম্যাচ খেলতে ভারতে এসেছিল ইংল্যান্ড। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের গোল্ডেন জুবিলি উদযাপন করতে। কিন্তু সেই অগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটাতেই মহা গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডটা করেন বোথাম। প্রথম ইনিংসে ৫৮ রানে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। এরপর ব্যাট হাতে খেলেন ১১৪ রানের একটা দুর্দান্ত ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ে আরও দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন। ৪৮ রানে নেন ৭ উইকেট। সেঞ্চুরি, সেই সঙ্গে ১৩ উইকেট!
ইমরানের কৃতিত্বটাও ভারতেরই বিপক্ষে। বোথামের কীর্তির তিন বছর পর। ৬ ম্যাচের সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে গিয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটা ছিল ফয়সালাবাদে। ম্যাচটা সুনীল গাভাস্কারের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারত। এই ম্যাচে ২৬ নম্বর সেঞ্চুরিটা করে গ্যারি সোবার্সকে ছুঁয়েছিলেন লিটল মাস্টার। কিন্তু ১০ উইকেটে হেরে যাওয়ার তিক্ত স্বাদের কারণে গাভাস্কার হয়তো ভুলতেই চেয়েছেন ম্যাচটা। আর যাঁর কারণে ভারতকে এই চিরতার শরবত গিলতে হয়েছে, তিনি ইমরান।
ভারতের প্রথম ইনিংসে ৯৮ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে চার ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেন। এঁদের মধ্যে ইমরান খেলেন ১১৭ রানের ইনিংস। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮২ রানে নেন ৫ উইকেট।
এর পর আজ সাকিবের সৌজন্যে এমন কীর্তি দেখল ক্রিকেট। টেস্ট ইতিহাসের এই সুদীর্ঘ ইতিহাসে মাত্র দুজনের ছিল এই কীর্তি। এতেই পরিষ্কার, সাকিবের অর্জনটা কত বড়! কাজটা যে কতটা কঠিন, গত ৩১ বছরে অনেক বড় বড় তারকা অলরাউন্ডারের আবির্ভাব হলেও কিন্তু গড়তে পারেননি আর কেউ। তিন দশক পর বোথাম-ইমরানের পাশে বসলেন সাকিব।
আগের দিনই একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি দুবার গড়ে সোবার্স, বোথাম, মুশতাক মোহাম্মদ, জ্যাক ক্যালিসদের পাশে নাম লিখিয়েছিলেন। আজ তো সেই কীর্তিকেও ছাপিয়ে গেলেন সাকিব। এ যেন এভারেস্ট জয়ের সমান এক অর্জন। নাকি চাঁদে পা রাখার মতো কোনো কীর্তি !


No comments:
Post a Comment
Thank you very much.