আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী ১ লাখ ২৪ হাজার পয়গম্বর পাঠিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩১৫ জন ছিলেন রাসুল আর বাকিরা নবী। যারা রাসুল তারা নবীও, আর যারা নবী তারা শুধু নবী। আদি পিতা হজরত আদম (আ.) ছিলেন প্রথম প্রেরিত রাসুল এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বশেষ প্রেরিত রাসুল। হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রেরিত হয়েছিলেন বিশ্ববাসীর জন্য রাসুল হিসেবে বনি ইসমাঈলের কোরাইশ বংশে এবং তাঁর ওপর কোরআন নাজিল হয়েছিল বিশ্ববাসীর জন্য দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে মানুষের বাস্তব চাহিদা অনুযায়ী ক্রমান্বয়ে। শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর আগমন ও শেষ কিতাব কোরআন নাজিলের পর বিগত সব নবুয়ত এবং কিতাবের হুকুম রহিত হয়ে গেছে।
এখন বিশ্বমানবতাকে পথপ্রদর্শনের জন্য শুধু সর্বশেষ ঐশীগ্রন্থ কোরআনই অবশিষ্ট আছে। ১ লাখ ২৪ হাজার পয়গম্বরের মধ্যে কোরআনে মাত্র ২৬ জন নবী-রাসুলের নাম এসেছে। এর মধ্যে একত্রে ১৭ জনের নাম এসেছে সূরা আনয়ামের ৮৩ থেকে ৮৬ আয়াতে। বাকিদের নাম এসেছে কোরআনের বিভিন্ন স্থানে। শুধু ইউসুফ (আ.) এর কাহিনী সূরা ইউসুফে একত্রে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.) কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘আমরা আপনার আগে এমন অনেক রাসুল পাঠিয়েছি, যাদের বৃত্তান্ত আপনাকে শুনিয়েছি এবং এমন অনেক রাসুল পাঠিয়েছি, যাদের বৃত্তান্ত আপনাকে শুনাইনি।’ (সূরা নিসা : ১৬৪, সূরা মুমিন : ৭৮)। কোরআনে পূর্ববর্তী নবী-রাসুলের কাহিনী বর্ণনার উদ্দেশ্য হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) যেন নবুয়তের গুরুদায়িত্ব পালনে প্রস্তুত হতে পারেন এবং তাঁর উম্মত এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। আল্লাহ বলেন, ‘আমি পয়গম্বরদের এসব কাহিনী আপনার কাছে বর্ণনা করার মাধ্যমে আপনার অন্তরকে সুদৃঢ় করি। আর এর মধ্যে এসেছে আপনার প্রতি সত্য, উপদেশ ও বিশ্বাসীদের জন্য স্মরণীয় বস্তুগুলো।’ (সূরা হুদ : ১২০)।
সৃষ্টি করলেন আদমকে
তারপর কি হল? তারপর তিনি সৃষ্টি করলেন প্রথম মানুষ। সৃষ্টি করলেন তাঁকে মাটি দিয়ে। (সুরা ২ আল বাকারাঃ আয়াত ৩০) মাটির দেহ তৈরি হয়ে যাবার পর তার মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেন জীবন। তিনি হয়ে গেলেন এক জ্যান্ত মানুষ। আল্লাহ তাঁর নাম দিলেন ‘আদম’। তিনি আদমকে শুধু জ্যান্ত মানুষই বানান্ নি। বরং খালাকাল ইনসান, আল্লামাহুল বাইয়ান-তাকে মানুষ বানালেন এবং কথা বলা শিখালেন।
তারপর কি হল? তারপর তিনি সৃষ্টি করলেন প্রথম মানুষ। সৃষ্টি করলেন তাঁকে মাটি দিয়ে। (সুরা ২ আল বাকারাঃ আয়াত ৩০) মাটির দেহ তৈরি হয়ে যাবার পর তার মধ্যে ঢুকিয়ে দিলেন জীবন। তিনি হয়ে গেলেন এক জ্যান্ত মানুষ। আল্লাহ তাঁর নাম দিলেন ‘আদম’। তিনি আদমকে শুধু জ্যান্ত মানুষই বানান্ নি। বরং খালাকাল ইনসান, আল্লামাহুল বাইয়ান-তাকে মানুষ বানালেন এবং কথা বলা শিখালেন।
পৃথিবীতে আগত সব নবী-রাসুলই মূলত চারটি বংশধারা থেকে এসেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ আদম, নুহ, আলে ইবরাহিম ও আলে ইমরানকে নির্বাচিত করেছেন, যারা একে অপরের বংশধর ছিল।’ (সূরা আলে ইমরান : ৩৩, ৩৪)। এখানে আলে ইবরাহিম বলতে ইসমাইল ও ইসহাক (আ.) এবং আলে ইমরান বলতে মুসা (আ.) ও তার বংশধরদের বোঝানো হয়েছে। ইবরাহিম (আ.) এর জ্যেষ্ঠ পুত্র ইসমাঈল (আ.) এর বংশে সর্বশেষ রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। উভয় সূত্রের আদিপিতা ছিলেন বিধায় হজরত ইবরাহিম (আ.) কে ‘আবুল আম্বিয়া’ বা নবীদের পিতা বলা হয়।
কোরআনে বর্ণিত ২৬ জন নবী হলেন-
১. হজরত আদম (আ.),
২. নুহ (আ.),
৩. ইদরিস (আ.),
৪. হুদ (আ.),
৫. সালেহ (আ.),
৬. ইবরাহিম (আ.),
৭. লুত (আ.),
৮. ইসমাঈল (আ.),
৯. ইসহাক (আ.),
১০. ইয়াকুব (আ.),
১১. ইউসুফ (আ.),
১২. আইয়ুব (আ.),
১৩. শুয়াইব (আ.),
১৪. মুসা (আ.),
১৫. হারুন (আ.),
১৬. ইউনুস (আ.),
১৭. দাউদ (আ.),
১৮. সুলায়মান (আ.),
১৯. ইলিয়াস (আ.),
২০. আল ইয়াসা (আ.),
২১. জুলকিফল (আ.),
২২. জাকারিয়া (আ.),
২৩. ইয়াহইয়া (আ.),
২৪. ঈসা (আ.),
২৫. ওজায়ের (আ.)
২৬. হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
১. হজরত আদম (আ.),
২. নুহ (আ.),
৩. ইদরিস (আ.),
৪. হুদ (আ.),
৫. সালেহ (আ.),
৬. ইবরাহিম (আ.),
৭. লুত (আ.),
৮. ইসমাঈল (আ.),
৯. ইসহাক (আ.),
১০. ইয়াকুব (আ.),
১১. ইউসুফ (আ.),
১২. আইয়ুব (আ.),
১৩. শুয়াইব (আ.),
১৪. মুসা (আ.),
১৫. হারুন (আ.),
১৬. ইউনুস (আ.),
১৭. দাউদ (আ.),
১৮. সুলায়মান (আ.),
১৯. ইলিয়াস (আ.),
২০. আল ইয়াসা (আ.),
২১. জুলকিফল (আ.),
২২. জাকারিয়া (আ.),
২৩. ইয়াহইয়া (আ.),
২৪. ঈসা (আ.),
২৫. ওজায়ের (আ.)
২৬. হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
অন্য ২৪ জন হলেন-
২৭. হজরত শিস (আ.),
২৮. হিজকিল (আ.),
২৯. জারজিস (আ.),
৩০. মাশবিল (আ.),
৩১. মুদরিকা (আ.),
৩২. দানিয়াল (আ.),
৩৩. ইসরাইল (আ.),
৩৪. জারুত (আ.),
৩৫. ইয়াসিন (আ.),
৩৬. আসাফ (আ.),
৩৭. ইউওয়াসুন (আ.),
৩৮. সাতউন (আ.),
৩৯. ইউহানা (আ.),
৪০. শামাল (আ.),
৪১. সাকিল (আ.),
৪২. দায়োবাস (আ.),
৪৩. ইয়ালরুহি (আ.),
৪৪. কাফলিতিস (আ.),
৪৫. ইয়াউক (আ.),
৪৬. ইজাসফাউল (আ.),
৪৭. তাসতাররিহা (আ.),
৪৮. আলসাজার (আ.),
৪৯. মিতনাসি (আ.) এবং
৫০. আইশতা (আ.)।
২৭. হজরত শিস (আ.),
২৮. হিজকিল (আ.),
২৯. জারজিস (আ.),
৩০. মাশবিল (আ.),
৩১. মুদরিকা (আ.),
৩২. দানিয়াল (আ.),
৩৩. ইসরাইল (আ.),
৩৪. জারুত (আ.),
৩৫. ইয়াসিন (আ.),
৩৬. আসাফ (আ.),
৩৭. ইউওয়াসুন (আ.),
৩৮. সাতউন (আ.),
৩৯. ইউহানা (আ.),
৪০. শামাল (আ.),
৪১. সাকিল (আ.),
৪২. দায়োবাস (আ.),
৪৩. ইয়ালরুহি (আ.),
৪৪. কাফলিতিস (আ.),
৪৫. ইয়াউক (আ.),
৪৬. ইজাসফাউল (আ.),
৪৭. তাসতাররিহা (আ.),
৪৮. আলসাজার (আ.),
৪৯. মিতনাসি (আ.) এবং
৫০. আইশতা (আ.)।
মাওলানা মুনীরুল ইসলাম (বোখারি শরিফ, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, কাসাসুল কোরআন প্রভৃতি)।