google-site-verification: googlefee13efd94de5649.html স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি - তারুণ্যের কন্ঠস্বর

HeadLine

News Update :

Tuesday, September 15

স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি

স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি বা লো লাইট ফটোগ্রাফি যেকোনো নতুন ফটোগ্রাফারের জন্যেই ভীতিকর হতে পারে। দিনের বেলায় বা আলো থাকা অবস্থায় ফটোগ্রাফি আর স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি দু’টো দুই গ্রহের জিনিস। যে দিনের বেলায় ভালো ছবি তুলতে পারে সে রাতের বেলায় অথবা সন্ধ্যাতেও ভালো ছবি তুলতে পারবেন এমনটা নাও হতে পারে। স্বল্প আলোতে ছবি তোলার জন্যে যেমন প্রচুর প্র্যাকটিসের দরকার তেমনই বেশ অনেকগুলো বিষয় একইসাথে মাথায় রাখা দরকার। স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি করার সময় লক্ষণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হল-
আলোর কম বেশি হওয়াটা দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন আপনি দুপুরে খোলা জায়গায় সূর্য থেকে যথেষ্ট আলো পাবেন তাই আলোক স্বল্পতার কোন কারণ নেই, কিন্তু ওই একই সময়ে যদি আপনি কোন বড় গাছের নিচে বা কোন বড় বিল্ডিং এর পিছে ছবি তুলেন? সেক্ষেত্রে কি হবে? আকাশে যথেষ্ট আলো থাকা স্বত্বেও তখন আপনি আলোক স্বল্পতায় ভুগবেন।
স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি
আবার সন্ধ্যে বেলায় বা একদম পড়ন্ত বিকেলে আলোক স্বল্পতা দেখা যায়, তখন যা আলো থাকে তাতে আপনি পরিষ্কার ভাবে দেখতে পারলেও ক্যামেরাকে ঠিক আপনার মতোই দেখাতে হলে বেশ অনেকটাই কসরত করতে হবে। এই সময়ে আপনার যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তা দুপুরে কোন গাছের নিচে বা বিল্ডিং এর পিছের কোন স্থানে ছবি তোলার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।
আবার একদম আলোহীন অবস্থা হতে পারে রাতে, তখন আশেপাশে থেকে যতটুকু আলো আসে তাতে কোনক্রমেই হবেনা , তবে আগুনের সামনে থাকলে বা আলোতে ভরপুর রুমে তেমন সমস্যা নেই, তবে এই সময় মন মতো ছবি পেতে হলে অবশ্যই ফ্ল্যাশ ব্যবহার করতে হবে।
এবার তাহলে শুরু করা যাক স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি করার সময় কি কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। লেখায় দুপুর, সন্ধ্যা আর রাতের আলোক ভিন্নতার কথা মাথায় রেখেই ধাপে ধাপে আগানো হবে।
শাটার স্পিড
শাটার স্পিড কম আলোতে ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে অবশ্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যারা সাধারণত নতুন বা নাইট ফটোগ্রাফি সম্পর্কে জানেন না তারা খেয়াল করে থাকবেন যে রাতে যখন কোন ছবি তুলেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছবিটা অনেকটাই ঘোলাটে বা ব্লারি হয়। কখনো ভেবেছেন এর কারণ কি?
ছবি ঘোলাটে হওয়ার পিছে শাটার স্পিডের ও বেশ খানিকটা ভূমিকা আছে। স্লো শাটার স্পিডে হাত খানিকটা নোড়ে গেলেও ছবি ব্যাপক ঘোলাটে হয়ে উঠতে পারে। তবে যদি ট্রাইপড ব্যবহার করা হয় আর যে বিষয়ের ছবি তোলার হবে তা অনড় কিছু হয় তবে ব্যাপার ভিন্ন। তবে স্বল্প আলোতে যদি মানুষের ছবি তুলতে চেষ্টা করা হয় আর তখন শাটার স্পিড স্লো থাকে তাহলে ছবি ঘোলাটে আসবে, সে জন্যে আইএসও বাড়িয়ে ফাস্ট শাটার স্পিড এ ছবি তোলা উচিৎ। যদিও আইএসও বাড়ালে ছবিতে নয়েজ চলে আসবে তবুও র মোডে ছবি তুললে ইমেজ এডিটিং সফটওয়্যারের মাধম্যে নয়েজ অনেকাংশেই বা অল্প নয়েজ হলে পুরোটাই তুলে দেয়া সম্ভব।
লো লাইট ফটোগ্রাফি
তবে আপনি যদি ছবিতে মোশন ব্লার চান, তবে স্লো শাটার স্পিডই ব্যবহার করতে হবে ছভিতে। মোশন ব্লার দারুণ মজার জিনিস, ছবি তোলার পরে অনেকক্ষণ মুগ্ধ হয়েই তাকিয়ে থাকবেন যদি মন মতো ছবি পেয়ে যান। মোশন ব্লার এর জন্যে অবশ্যই ট্রাইপড ব্যবহার করতে হবে আপনাকে।
মনে রাখা উচিৎ ছবি বেশি ব্লার হয়ে গেলে সেটা এডিট করে ঠিক করা সম্ভব না, কিন্তু ছবিতে খানিকটা নয়েজ আসলে সেটাকে সহজেই মুছে ফেলা যাবে। তবে বেশি নয়েজ এসে পড়লে ভোগান্তি হবে অনেক।
ট্রাইপড
কম আলোতে ছবি তোলার সময় অবশ্যই ট্রাইপড ব্যবহার করা উচিৎ, যেকোনো রকম বিপত্তি থেকে মুক্তি দিতে পারে ট্রাইপড। ক্যামেরাকে টানা কয়েক সেকেণ্ড একটু খানিও না নড়িয়ে রাখা আমাদের হাতের পক্ষে সম্ভব না, তাই স্বল্প আলোতে ছবি তুলতে অবশ্যোই ট্রাইপড ব্যবহার করা উচিৎ। যদি কোন কারণে ট্রাইপড না থাকে সাথে তবে নিজেকে কোনো কিছুতে ঠেস দিয়ে বা ক্যামেরা কোন অনড় বস্তুতে রেখে অনেকটাই স্নাইপারের মতো করে ছবি তোলা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি নিজেকে স্নাইপার ভাবলেও ভাবতে পারেন।
Brooklyn Bridge New York City - NY
আইএসও (ISO)
ঘোলা ছবি না নয়েজসহ শার্প ছবি? আপনি কোনটির পক্ষ নিবেন? সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় শার্প ছবির পক্ষ নিবেন, তবে অল্প আলোতে সেক্ষেত্রে আইএসও বাড়িয়ে নিতে হবে অনেক খানি। বেশি আইএসও ছবিতে অনেক নয়েজ এনে দিতে পারে কিন্তু আপনার ছবি শার্প থাকছে। তাই অল্প আলোতে আইএসও বাড়িয়ে নিন।
র মোড (RAW)
ভালো মানের ফটোগ্রাফাররা যারা ডিজিটাল এস এল আর ব্যবহার করছেন তারা সবাই র মোডে ছবি তুলে থাকেন। র মোডে ছবি তোলার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে কোন কারণে আপনার ছবি খানিকটা আন্ডার এক্সপোজ বা ওভার এক্সপোজ বা অন্য কোন সমস্যা থেকে সহজেই উত্তরণ পাওয়া যাবে। কিন্তু র মোড ছাড়া জেপিইজি [Jpeg] তে ছবি তুললে আপনি এডিট করার সময় বেশ অনেক সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করবেন।
র মোডে ছবি তুললে যেকোনো ছোটখাটো ভুল-ভ্রান্তি সহজেই দূর করা সম্ভব। আর স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি করতে গেলে ভুল-ভ্রান্তি হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছুনা। তাই স্টোরেজ বেশি থাকলে র মোডে ছবি তোলার চেষ্টা করবেন।
ফোকাস
বাড়তি ঝামেলা এড়াতে অনেকেই ক্যামেরাতে অটো-ফোকাস ব্যবহার করেন। তবে রাতের বেলায় অটো-ফোকাস ব্যবহার না করার পরামর্শই দিবো আমি। আলোকস্বল্পতার কারণে ক্যামেরা নিয়মিত ফোকাস হারায়, ফলে আপনি আসলে যা চাচ্ছেন ছবিতে তা নাও পেতে পারেন। দেখা যাবে আপনি চাচ্ছেন আপনার কাছের মানুষটিকে ফোকাসে রেখে আগুনকে ব্লার করবেন বা আউট অব ফোকাস রাখবেন; কিন্তু দেখা গেলো ক্যামেরা ফোকাস হারিয়ে আগুনকে ফোকাস করেছে আর মানুষটি ঘোলাটে হয়ে গেছে।
এমন বিপত্তিকর অবস্থা এড়াতে রাতের বেলায় এবং দিনের অন্যান্য সময় কম আলোতে ম্যানুয়াল ফোকাস ব্যবহার করা উচিৎ। এতে করে ক্যামেরা কোথায় ফোকাস করবে সেটা আপনি নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। তাই ক্যামেরা তার নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা দিয়ে কোনটা ফোকাসে রাখতে হবে আর কোনটা রাখতে হবে না, সেটা নির্ধারণ করবে না।
রিমোট শাটার
ব্লার না করে শার্প ছবির জন্যে সর্বাধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রিমোট শাটার ব্যবহার করতে পারেন। এমন হতে পারে যে ট্রাইপড থাকা সত্ত্বেও আপনি শাটার বাটনে প্রেস করার সময় ক্যামেরা খানিকটা বা একটু বেশিই নাড়িয়ে দিলেন, তখন ছবি ব্লারি আসবে। তাই নিজের উপর সেইটুকু বিশ্বাসও রাখতে না পারলে আর শার্প ছবির জন্যে সর্বাধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রিমোট শাটার ব্যবহার করতে পারেন।
ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার
IS/VR এর পুরো ফর্ম হছে ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন/ভাইব্রেশন রিডাকশন। আপনার লেন্সে কে ইমেইজ স্ট্যাবিলাইজ করার বা ভাইব্রেশন রিডাক্ট করার ক্ষমতা আছে? যদি থেকে থাকে তাহলে ভালো আর যদি না থেকে তাহলে আপনার জন্যে কিঞ্চিৎ আফসোস হুওয়াটাই স্বাভাবিক। ছবি তোলার সময় হাত খানিকটা নড়ে-চড়ে যেতে পারে, স্লো শাটার স্পিডে ছবি তোলার সময়ও এমনটা হতে পারে কিন্তু ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার সহ লেন্স এই মৃদু বা মোটামোটি নাড়াচাড়া এড়িয়ে শার্প ছবি দেয়ার ক্ষমতা রাখে। ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার সহ লেন্স থেকে থাকলে অবশ্যই অপশনটি চালু রাখুন।
এ নিয়ে আর বিস্তারিত বলছি না। উইকিপিডিয়াতে ঢু মারতে পারেন –
low-2
ফ্ল্যাশ
অনেকের মাথায় এমন প্রশ্ন আসতে পারে যে স্বল্প আলোতে ছবি তুলতে যা সবচেয়ে বেশি দরকার সেটাকে কেনো এখনো আলোচনায় আনা হলো না। শেষের দিকে ফ্ল্যাশ নিয়ে কথা বলার পিছে যথেষ্ট কারণ আছে। ভালো ছবি বলতে যা বোঝায় তা অল্প আলোতে বা রাতে বিল্ট ইন ফ্ল্যাশ দিয়ে না পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি। ফ্ল্যাশ সরাসরি সাবজেক্টে পড়লে মোটেও সেটা ভালো ফল দেয় না। তাই দরকার ভালো মানের এক্সটার্নাল ফ্ল্যাশ।
ভালো মানের ফ্ল্যাশ এর দাম অনেক বেশি, কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যাবে আপনার ক্যামেরার চাইতেও ফ্ল্যাশের দাম বেশি। যেহেতু আলাদা ফ্ল্যাশ কেনা ব্যয়সাপেক্ষ তাই অনেকেরই হয়তো সেটা জোগাড় করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। আর যারা আমার মতো নিতান্তই টুক টাক প্রয়োজন আর শখের বসে ছবি তোলার জন্যে ডিএসএলআর কিনেছেন তাদের মধ্যে ফ্ল্যাশ না কেনার প্রবণতাটাই বেশি থাকে।
অল্প আলোতে ছবি তোলার সময় ভালো ফ্ল্যাশ ছবিকে সম্পূর্ণরুপে পাল্টিয়ে ফেলতে পারে। তবে ফ্ল্যাশ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিছুটা সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ভালো। সরাসরি সাবজেক্টে ফ্ল্যাশ না করে কোন কিছুতে যদি বাউন্স করে ফ্ল্যাশ ব্যবহার করা যায় তাহলে বেশ ভালো ছবি পাওয়া সম্ভব।

No comments:

Post a Comment

Thank you very much.