‘১৫০ কিমি গতিতে বল করতে চাই’
[caption id="" align="alignnone" width="735"]
বসুন্ধরা সিটিতে বিশ্বকাপ ট্রফি প্রদর্শনীতে তিনি ছিলেন ক্রিকেটারদের প্রতিনিধি। স্বপ্নাতুর চোখে তাকিয়ে ছিলেন ট্রফির দিকে। তাসকিন আহমেদ শোনালেন তাঁর স্বপ্নের কথাও।
:বিলবোর্ড-বিজ্ঞাপনে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ দেখা যাচ্ছে আপনাকে। কেমন লাগে নিজেকে বিলবোর্ডে দেখতে?
তাসকিন আহমেদ: খুব বেশি না, কয়েকটা মাত্র বিলবোর্ড করা হয়েছে। একদিনই মাত্র ফটোশ্যুট হয়েছিল। এর পরই বিসিবি নিয়ম করল যে অনুমতি নিয়ে বিজ্ঞাপন করতে হবে। আমিও বলেছি, আর দরকার নেই। হ্যাঁ, নিজেকে ওভাবে দেখতে ভালোই লাগে। আর একদিন সবকিছুতেই নিজেকে দেখতে চাই। ক্রিকেট মাঠে বা বাইরে যা-ই করি, সব ক্ষেত্রেই সেরা হওয়ার ইচ্ছা।
:মনে হয় না, তারকা খ্যাতিটা একটু দ্রুতই পেয়ে গেলেন!
তাসকিন: আমি নিজেকে তারকা ভাবি না। দুই ম্যাচেই কেউ তারকা হয় না। দুই ম্যাচে ৭ উইকেট পেয়ে বড় ক্রিকেটার হওয়া গেলে তো কাজই হতো! বলতে পারেন, লোকের ভালোবাসা পেয়েছি খুব দ্রুতই। এদিক থেকে আমি খুব সৌভাগ্যবান। তবে প্রচণ্ড চাপও আছে। শুরুতেই ভালো করেছি বলে লোকে আরও ভালো কিছু চায়। আমিও ভালো করতে চাই। ভালো ক্রিকেটার, ভালো মানুষ...সব মিলিয়ে একটা পরিপূর্ণ প্যাকেজ হতে চাই।
:এই ফটোশ্যুট, গ্ল্যামার জগতের ছোঁয়া, খ্যাতি, এত দ্রুত সবকিছু হচ্ছে, ক্রিকেটে মনযোগে ব্যঘাত ঘটবে না তো!
তাসকিন: সত্যি বলতে, এসবে আমার আগ্রহ নেই। ভারত সিরিজের পর অনেক অনেক বিজ্ঞাপন, মডেলিং, টিভিসির প্রস্তাব পেয়েছি, এখনো পাচ্ছি। সবাইকে ফিরিয়ে দিয়ে বলেছি, ‘আমাকে খেলতে দিন, একটা পর্যায়ে যেতে দিন। তারপর ভাবলে ভাবা যাবে।’ শখ করে কেবল এই দু-একটা করেছি, সেটাও খুব উপভোগ করিনি। আমার ভালোলাগা-ভালোবাসা, সবই ক্রিকেট। আমার চিন্তাভাবনায় ক্রিকেট ছাড়া আর কিছু নেই।
:ক্রিকেটে ফেরা যাক। অভিষেকে ৫ উইকেট, বাংলাদেশের রেকর্ড, এমন শুরু কি ভাবতে পেরেছিলেন কখনো?
তাসকিন: সব সময় স্বপ্ন ছিল একদিন জাতীয় দলে খেলব। প্রথম ম্যাচে ভালো করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ৫ উইকেট স্বপ্নেও ভাবিনি। আরেকটা ব্যাপার, প্রথম যেদিন বাংলাদেশের হয়ে খেলতে নামলাম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, প্রথম বলটি করার আগে দেখি গোটা স্টেডিয়াম ‘তাসকিন, তাসকিন’ বলে চিৎকার করছে। শিহরিত হয়ে গিয়েছিলাম। এই মুহূর্তগুলোই বড় প্রাপ্তি! এটা কখনো ভুলব না।
:অভিষেকের ৫ উইকেটের আনন্দ তো মিইয়ে গিয়েছিল দল ৫৮ রানে অলআউট হওয়ায়!
তাসকিন: সেদিনের উইকেট আসলে ব্যাটিংয়ের জন্য খুব কঠিন ছিল। আমি একসময় ভুলেই গিয়েছিলাম যে ৫ উইকেট পেয়েছি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দলের জয়-পরাজয়ই আসল। এটাও একটা শিক্ষা। ক্রিকেটের দুটো দিক দেখা হলো দ্রুত।
:আপনার গতি ভালো, লেংথও। সুইং করাতে পারেন দুই দিকে। নিজের সবচেয়ে শক্তির জায়গা মনে করেন কোনটিকে?
তাসকিন: গতির কথাই বলব। সুইং-টুইং তো আছেই। কিন্তু ফাস্ট বোলারদের জন্য গতি আর জায়গাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভালো গতিতে ঠিক জায়গায় বল করতে পারলে ব্যাটসম্যান ভুগবেই।
:দুই দিকে সুইং করানোর ক্ষমতা কি আপনার সহজাত?
তাসকিন: ইনকাটার অনেকটা ন্যাচারাল। আউট সুইং নিয়ে কাজ করছি। ইনশাল্লাহ দিনে দিনে আরও উন্নতি হবে।
:নিকট ভবিষ্যতে নতুন আর কী কী যোগ করতে চান বোলিংয়ে?
তাসকিন: গতির সঙ্গে কখনোই আপস নয়। গতি আরও বাড়াতে হবে, কমানো যাবে না। আমার স্বপ্ন, একদিন ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে চাই। এখনই ১৪০ কিমির আশপাশে বল করছি, দু-একটি ডেলিভারি ১৪৪-১৪৫ হয়ে যায়। তাহলে ১৫০ কেন পারব না!
:আপনার চোটের সময়টার কথা বলুন। এক বছরেরও বেশি সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে, একা একা অনুশীলন...কেমন ছিল সময়টা?
তাসকিন: খুব কঠিন, খুব কষ্টের। দেড় বছর মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। স্রেফ রিহ্যাব করেছি, জিম, রানিং...বল হাতে নিতে পেরেছি ৮ মাস পর। মাঝে মাঝে খুব মন খারাপ হতো, আর কখনো বুঝি ফিরতে পারব না! তবে নিজেকে বুঝিয়েছি অসম্ভব বলে কিছু নেই। একদিন সুসময় আসবে, এই আশায় কষ্ট করে গেছি।
:কঠিন সময়ে সবচেয়ে বেশি পাশে পেয়েছেন কাকে?
তাসকিন: বোর্ডের কথা বলব। বিসিবি আমাকে খুব ভালোভাবে সামলেছে। সার্জারি লাগেনি, অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়েছে। সময় নিয়ে রিহ্যাব করিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ফিজিও-ট্রেনারের পরামর্শে। এখনো বিসিবির সূচিমতোই ফিটনেস ট্রেনিং, বোলি, রানিং জিম করছি। পরিচর্যা আমি খুব ভালোই পেয়েছি, পাচ্ছি।
:বাংলাদেশের পেসারদের চোটের ইতিহাস খুব ভালো নয়। মাশরাফি, তালহা, রুবেল...আপনারও এত বড় চোট ক্যারিয়ারের শুরুতেই, ভয় লাগে না?
তাসকিন: আগে লেগেছে। এখন আর নেই। পেসারদের ইনজুরি হবেই। একই সঙ্গে বলব, বিসিবি আমার খুব ভালো যত্ন নেওয়ায় এর প্রতিদান দিতে চাই। একদিন দলের সবচেয়ে ফিট ক্রিকেটার হব ইনশাল্লাহ।
:এখনো তো টেস্ট খেলার মতো ফিট নন, কবে নাগাদ খেলতে পারবেন?
তাসকিন: আরও দু-তিন মাস তো লাগবেই। তবে তাড়াহুড়া নয়। পুরো ফিট হয়ে টেস্টে নামতে চাই। টেস্ট ক্রিকেটটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
:মাশরাফির সঙ্গে নিশ্চয়ই অনেক কথা হয় চোট নিয়ে?
তাসকিন: সবকিছু নিয়েই কথা হয়। আমাকে সব সময় বলেন কোনটা করা উচিত, কোনটা নয়। নিজের ভুল থেকে আমাকে সাবধান করেন। মাঠের বাইরে চলাফেরা, লাইফস্টাইল—সব ব্যাপারেই মাশরাফি ভাই আমাকে নিজের ভাইয়ের মতো পরামর্শ দেন।
:আদর্শ তাহলে মাশরাফিই?
তাসকিন: অবশ্যই। ক্রিকেটার হিসেবে যেমন, তেমনি মানুষ হিসেবেও। ছোট থেকে বোলার মাশরাফির ভক্ত ছিলাম, কাছাকাছি আসার পর আরও বেশি ভক্ত হয়েছি। ওনার সবকিছুই অনুসরণীয়। আর বোলার হিসেবে দেশের বাইরে আদর্শ মরনে মরকেল।
:শুরুটা তো ভালো হলো, সামনে কী অপেক্ষায়?
তাসকিন: সামনের প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি বল গুরুত্বপূর্ণ। যে তিনটি ম্যাচ খেলেছি, ভালো করেছি। কিন্তু ওটা এখন অতীত। ২২ গজে বল হাতে নিলে দেশের কথাই সবচেয়ে বেশি মনে থাকে। প্রতিটি বল জান দিয়ে করতে চাই। এমনকি কোনো প্র্যাকটিস সেশনেও বোলিং ভালো না হলে মুষড়ে পড়ি। ভাবি, কেন এমন হলো, ভুলটা কোথায়?
:ক্যারিয়ার নিয়ে স্বপ্ন, লক্ষ্য?
তাসকিন: বাংলাদেশের হয়ে সব ফরম্যাটে খেলতে চাই দাপটে। বাংলাদেশকে বিশ্বসেরার কাতারে দেখার স্বপ্ন আছে। নিজে বিশ্বের এক নম্বর বোলার হতে চাই। বাংলাদেশের ফাস্ট বোলার হয়েও যে সেটা সম্ভব, দেখিয়ে দিতে চাই একদিন।
মাশরাফির আর টেস্ট খেলা হবে না!
[caption id="" align="alignleft" width="300"]
প্রসঙ্গটা যখনই ওঠে, কেমন শূন্য দৃষ্টিতে তাকান। টেস্ট ক্রিকেট...আবার কি খেলা হবে কোনো দিন? মাশরাফি বিন মুর্তজার বুকের ভেতর খুব নিবু নিবু হয়েও সম্ভবত একটা আশার সলতে জ্বলছে। সে জন্যই এখনো বলে দেননি, ‘আর টেস্ট খেলব না।’ টেস্টে ফেরার প্রসঙ্গ উঠলে টানতে চান না কোনো উপসংহার। ‘দেখা যাক...’ জাতীয় কিছু একটা বলেই শেষ করে দেন আলোচনা।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, আর হয়তো টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা হচ্ছে না দেশের সেরা পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজার। ২০০৯ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সেন্ট ভিনসেন্টের সেই অসমাপ্ত টেস্টটাই সম্ভবত হয়ে গেছে তাঁর শেষ টেস্ট। মাশরাফি নিজে টেস্ট থেকে এখনো অবসরের ঘোষণা না দিলেও সত্যি হতে চলেছে এটাই।
২০০৯ সালে ওই সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টেই বল করার সময় ভারসাম্য হারিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন উইকেটের ওপর। সেই চোটের জন্য আরও একবার হাঁটুতে চলে অস্ত্রোপচার, আরও একবার মাঠ থেকে ছিটকে যান মাশরাফি। বরাবরের মতো চোটাঘাতকে হারিয়ে আবার মাঠে ফিরলেও ফেরা হয়নি টেস্টে। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩টা ওয়ানডে আর ১৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেললেও খেলেননি কোনো টেস্ট।
টেস্টে ফেরা বা না-ফেরার সিদ্ধান্তটা একান্তই মাশরাফির নিজের হলেও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ দেশের ক্রিকেটের স্বার্থেই মাশরাফির টেস্ট না খেলার পক্ষে। মাশরাফির টেস্ট খেলার চেয়ে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি দলে তাঁর উপস্থিতিকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন প্রধান নির্বাচক, ‘মাশরাফির মতো ক্রিকেটারকে দলে খুবই প্রয়োজন। তরুণদের আদর্শ হিসেবে কাজ করতে পারে সে। দলকে প্রেরণা জোগায়, উদ্দীপ্ত রাখতে পারে। আমরা চাই চোটমুক্ত থেকে মাশরাফি যত বেশি দিন সম্ভব জাতীয় দলকে সার্ভিস দিক। টেস্ট খেলে সে যদি আবারও ইনজুরিতে পড়ে, তার সেই সার্ভিসটা আমরা পাব না।’ নিয়মিত পরিচর্যার মধ্যে রেখে মাশরাফির খেলোয়াড়ি জীবন দীর্ঘায়িত করারই পক্ষে তিনি, ‘আমি চাই মাশরাফি যত বেশি দিন সম্ভব খেলুক। টেস্ট খেলাটা এখনো অনেক বড় ঝুঁকির ব্যাপার রয়ে গেছে ওঁর জন্য।’
ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টিতে টানা ৫-৬ ওভারের বেশি বল না করলেও চলে। কিন্তু টেস্টে সেটা সব সময় সম্ভব হয় না। পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী এখানে একজন বোলারকে টানা বল করে যেতে হয়। মাশরাফির এখনো সে রকম বল করার ফিটনেস আসেনি বলেই টেস্ট থেকে দূরে থাকছেন, নির্বাচকেরাও চাইছেন মাশরাফি শুধু ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটই চালিয়ে যান। গত ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় লিগে চার দিনের একটা ম্যাচ খেললেও মাশরাফিকে টানা বল করানো হয়নি সেখানেও।
আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তাই কেবল ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি দলেরই সঙ্গী হবেন মাশরাফি। এবারও খেলা হবে না টেস্ট। প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ তো কাল এটাও নিশ্চিত করে দিয়েছেন, অন্তত ২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত মাশরাফির টেস্ট দলে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই, ‘আমরা ২০১৫ বিশ্বকাপে সম্পূর্ণ সুস্থ মাশরাফিকে চাই। কাজেই তার আগে যে কয়টা টেস্ট আছে, মাশরাফির তাতে খেলার সম্ভাবনা নেই।’ আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুটি টেস্ট ছাড়াও অক্টোবর-নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিনটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ।
মাশরাফি যদি টেস্ট খেলতেও চান, তাহলে অপেক্ষা করতে হবে ২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। ২০০৯ থেকে ২০১৫—টেস্ট থেকে ছয় বছর দূরে সরে যাওয়া মাশরাফি কি তখন আর চাইবেন অনেকবার ছুরির নিচে যাওয়া হাঁটু জোড়ার ওপর আবারও টেস্ট ক্রিকেটের ভার দিতে?
মুশফিকের প্রেরণা ট্রফির ছোঁয়া
[caption id="" align="alignnone" width="754"]
এমনিতে এই ট্রফিটা তাঁর একবারই ছোঁয়ার কথা। বিশ্বকাপের আগে হয়তো সিডনি অপেরার সামনে ট্রফি হাতে পোজ দেবেন সব দেশের অধিনায়ক। তবে বিশ্বকাপের দেশে গিয়ে নয়, মুশফিকুর রহিম ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেলেন নিজ দেশেই।
ক্রিকেট বিশ্ব পরিভ্রমণের পালায় বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ট্রফি পরশু রাতে এসেছে বাংলাদেশে। কাল সকালে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেই ট্রফি দেখলেন, ছুঁলেন, তুলে ধরলেন। সব মিলিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত অধিনায়ক, ‘এই প্রথম এত কাছ থেকে দেখলাম, ছুঁলাম। অনেক ভারী। অবশ্য ভারীই হওয়ার কথা, বিশ্বকাপের ট্রফি বলে কথা!’
শুধু কণ্ঠেই নয়, রোমাঞ্চটা চোখে পড়ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের চোখে-মুখেও। মাঠের লড়াইয়ে জিতে এই ট্রফি তুলে ধরতে পারলে তো রোমাঞ্চটা আরও বেশিই হওয়ার কথা! বাস্তবের সীমানায় আপাতত সেই সম্ভাবনা নেই। অতদূর স্বপ্ন দেখাতে সংকোচ মুশফিকের কণ্ঠেও, ‘আশা করি এভাবে নয়, একদিন বাংলাদেশ সত্যি সত্যিই এই ট্রফি ছুঁয়ে দেখবে। আমি সব সময়ই এই স্বপ্ন দেখতাম, এখনো দেখি। আমরা তো চেষ্টা করবই। যদি না পারি, আশা করি একদিন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ঠিকই এই ট্রফি জয় করবে। মারা যাওয়ার আগে অন্তত দেখে যেতে চাই।’
ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণ নিয়ে সংশয় থাকলেও অনুপ্রেরণা মানতে তো ক্ষতি নেই! ট্রফির ছোঁয়াতেই জেগে উঠতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘বিশ্বকাপের ট্রফি ছুঁতে পারা অবশ্যই বড় অনুপ্রেরণা। সাম্প্রতিক সময় খুব ভালো কাটেনি আমাদের। আশা করি এটা সামনে আমাদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।’
মিরপুর স্টেডিয়াম থেকে সর্বসাধারণের দেখা ও ছবি তোলার জন্য ট্রফি রাখা হয়েছিল বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে। শ্রীলঙ্কা থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসেছে ট্রফি, থাকবে আজও। এরপর ১৮ আগস্ট যাবে ইংল্যান্ডে।
বাস্তবতা মানছেন হাথুরুসিংহে
[caption id="" align="alignleft" width="200"]
—সেরা খেলোয়াড়টিই দলে নেই। এটা কি একটু হতাশাজনক?
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে চটেই গেলেন প্রশ্নটা শুনে। মাথা ঝাঁকিয়ে ঝাঁজাল কণ্ঠে উত্তর, ‘আমি তো হতাশ নই। এটা আপনাদের বক্তব্য। আপনারা বক্তব্য দেবেন, আমি কীভাবে তা নিয়ে মন্তব্য করি...?’
হাথুরুসিংহের প্রতিক্রিয়া এ রকম হতেই পারে। কোনো কোচই চাইবেন না নির্দিষ্ট একজন খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতিকে খুব বড় করে দেখাতে। তাতে গোটা দলের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। হাথুরুসিংহে হয়তো সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিব আল হাসানের না থাকাকে হতাশাজনক বলে মানলেন না। তবে পরক্ষণেই আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বীকার করে নিলেন, ‘সাকিবের মানের একজন খেলোয়াড়কে যেকোনো দলই মিস করবে। কিন্তু আমরা কী করতে পারি? এই বাস্তবতার মুখোমুখি আমাদের হতেই হবে। আমরা তাই এখন সামনের দিকেই তাকাচ্ছি।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক ইতিহাস মোটেও সুখকর নয়। জানুয়ারির শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে শুরু, এরপর এশিয়া কাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ পর্যন্ত মুশফিকুর রহিমের দল কেবল ব্যর্থতার বৃত্তেই ঘুরপাক খেয়েছে। তবে পেছনে কী ঘটেছে সেদিকে না তাকিয়ে কোচ হতে চাচ্ছেন ভবিষ্যৎমুখী, ‘হার খেলারই অংশ এবং এসব এখন পেছনে পড়ে গেছে। আমরা চাইছি ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে, নতুন একটা শুরু করতে।’ খেলোয়াড়েরা মানসিকভাবে সেটার জন্য প্রস্তুত বলেও মনে করেন শ্রীলঙ্কান এই কোচ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়েছিল বরাবরের মতো ফিটনেস ট্রেনিং দিয়ে। এরপর গত কিছুদিন ব্যাটি-বোলিং-ফিল্ডিংয়ের অনুশীলনও হয়েছে। এখন পর্যন্ত হওয়া এসব অনুশীলনে কোচকে সন্তুষ্টই মনে হলো, ‘আমরা মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছিলাম। সেগুলো যেন আরও ভালো হয়, খেলোয়াড়েরা যেন জিনিসগুলো ভালোভাবে বোঝে।’ ব্যাটসম্যান-বোলারদের প্রসঙ্গে আলাদাভাবে বললেন, ‘ব্যাটসম্যানরা বোঝার চেষ্টা করেছে কোন জায়গাতে তাদের আরও ভালো করতে হবে। ভিডিওতে উন্নতির জায়গাগুলো দেখেছে। বোলাররাও ব্যক্তিগত দক্ষতা বাড়াতে কাজ করেছে। স্টক বল, বলে বৈচিত্র্য আনা এসব নিয়ে কাজ করেছে। ঈদের পরের অনুশীলনে আমরা আরও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করব।’
কোচ যে পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে যান না কেন টানা হারের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর মোটেও সহজ উপলক্ষ নয়। হাথুরুসিংহেও এটাকে বড় এক চ্যালেঞ্জই মনে করছেন, ‘যে কারও জন্যই এটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। আমি জানি যে আমরা জেতার মধ্যে নেই। কিন্তু এর থেকে বের হওয়ার একমাত্র উপায়ই হলো ওপরের দিকে ওঠা। পেছনে কী ঘটেছে সেগুলোতে আর ফেরা সম্ভব নয়। কাজেই আমি এখন চ্যালেঞ্জটার দিকেই তাকিয়ে। দেখি আগামী ৬-৭ মাসে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে।’
ঈদের আগে কালই ছিল শেষ অনুশীলন। প্রাথমিক দল নিয়েও শেষ অনুশীলন হয়ে গেল এদিন। ঈদের পর ২ আগস্ট থেকে অনুশীলন করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য গতকাল চূড়ান্তভাবে ঘোষিত ১৫ সদস্যের দল। তার আগে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকও। এ ছাড়া নতুন স্পিন কোচ পিয়াল বিজেতুঙ্গেরও চলে আসার কথা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে।
দলে ফিরলেন ইমরুল-রুবেল
[caption id="" align="alignnone" width="778"]
ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত সাকিব আল হাসান থাকবেন না জানাই ছিল। বাদ পড়েছেন ভারত সিরিজের দলে থাকা জিয়াউর রহমানও। কাল ঘোষিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ওয়ানডে দলে এই দুজনের জায়গা নিয়েছেন পেসার রুবেল হোসেন ও বাঁহাতি ওপেনার ইমরুল কায়েস।
ভারত সিরিজের দলে না থাকলেও রুবেল-ইমরুল দুজনই খেলেছেন গত মার্চের এশিয়া কাপে। দলে আর কোনো পরিবর্তন নেই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশন বলতেই আগে ভাবা হতো গতিময় বাউন্সি উইকেট। এখন অবস্থা পাল্টেছে। তার পরও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেহেতু বাউন্সি উইকেটে খেলতে অনভ্যস্ত, বাংলাদেশ দলের জন্য স্বাগতিকদের বাউন্সি উইকেটের ফাঁদ পাতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারেনি নির্বাচক কমিটি। ১৫ জনের দলে চার পেসার নেওয়ার ব্যাখ্যায় সেটাই বললেন প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিতে চেয়ে গতিময় বাউন্সি উইকেট বানাতে পারে। সে রকম পরিস্থিতির জন্য দলে চার পেসার রাখা।’
কিছুদিন ধরেই টপ অর্ডারে বড় জুটি হচ্ছে না। প্রয়োজনে যেন এদিক-সেদিক করে খেলানো যায় সে জন্য টপ অর্ডারে খেলার মতো ব্যাটসম্যান রাখা হয়েছে চারজন—তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, এনামুল হক (বিজয়) ও শামসুর রহমান। ‘এক, দুই ও তিন নম্বরে যেন যথেষ্ট বিকল্প থাকে, দল করার সময় আমরা সেটা মাথায় রেখেছি’—বলেছেন ফারুক।
উইন্ডিজ সিরিজের ওয়ানডে দল
মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, এনামুল হক (বিজয়), শামসুর রহমান, মুমিনুল হক, রুবেল হোসেন, নাসির হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিঠুন, আবদুর রাজ্জাক, মাশরাফি বিন মুর্তজা, সোহাগ গাজী, তাসকিন আহমেদ, ইমরুল কায়েস ও আল-আমিন হোসেন
সফরসূচি
১৭ আগস্ট
এক দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ, গ্রেনাডা
২০ আগস্ট
১ম ওয়ানডে, গ্রেনাডা
২২ আগস্ট
২য় ওয়ানডে, গ্রেনাডা
২৫ আগস্ট
৩য় ওয়ানডে, সেন্ট কিটস
২৭ আগষ্ট
টি-টোয়েন্টি, সেন্ট কিটস
৩০ আগস্ট-১ সেপ্টেম্বর
তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ, সেন্ট কিটস
৫-৯ সেপ্টেম্বর
১ম টেস্ট, সেন্ট ভিনসেন্ট
১৩-১৭ সেপ্টেম্বর
২য় টেস্ট, সেন্ট লুসিয়া
সমালোচনার তিরে বিদ্ধ ধোনিরা
ভারতের সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ধোনিদের ধুয়ে দিয়েছেন গাভাস্কার, ‘শেষ দিনের লাঞ্চের আগেই হেরে যাওয়াটাই বলছে বিন্দুমাত্র প্রতিরোধ ছিল না। ছিল না লড়াইয়ের ছিটেফোঁটাও। উদ্বেগের বিষয় এটাই। ভারতের হারটা ছিল অসহায় এক আত্মসমর্পণ।’
বিশাল এই জয়েই এক বছরের টেস্ট জয়ের খরা কেটেছে ইংল্যান্ডের। লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টে হেরে পিছিয়ে পড়া দলটি সমতা এনেছে সিরিজেও। গাভাস্কারের মতে ধোনিদের ‘দায়িত্বহীন’ পারফরম্যান্সেই ইংল্যান্ড সুযোগ পেয়েছে লর্ডস বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে, ‘লর্ডসে ইংল্যান্ডকে একেবারে ঠেসে ধরেছিল ভারত।আমি জানি মাঝের পাঁচ দিনে তারা কী করেছে, তবে সাউদাম্পটনে তারা দায়িত্বহীন ছিল। সেই উনিশ শ ত্রিশের দশক থেকেই ভারতীয় দলটা এই রোগে ভুগছে—আত্মতৃপ্তি!
আরেক সাবেক অধিনায়ক কপিল দেবের চোখে খলনায়ক বোলাররা। প্রথম দুই টেস্টে ভারতের বোলিংয়ের সঙ্গে সাউদাম্পটনের তুলনা টেনেছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক, ‘প্রথম দুই টেস্টে ভারতের প্রধান অস্ত্রই ছিল বোলিং। রোজ বোলের মতো ট্রেন্ট ব্রিজেও মরা উইকেট ছিল। এই দুই মাঠে ভারতীয় বোলারদের পারফরম্যান্সের পার্থক্যটা একবার ভাবুন তো!’
লর্ডসে ভারতের জয়ের নায়ক ইশান্ত শর্মা চোটের কারণে ছিলেন না এই ম্যাচে, থাকবেন না সিরিজের চতুর্থ টেস্টেও। তাই বাড়তি চাপ পড়েছিল ভুবনেশ্বর কুমার ও মোহাম্মদ সামির ওপরে। কপিলের মতে, ভুবনেশ্বরের বলে সুইং থাকলেও গতি ছিল না। অন্যদিকে সামির গতি থাকলেও ছিল না লেংথ।
সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলীও। অবশ্য কপিলের মতো বোলারদের নয়, সাবেক এই অধিনায়ক দোষ দিয়েছেন ব্যাটসম্যানদের। গাঙ্গুলী ভাবতেই পারছেন না যে স্পিন খেলার জন্য এত সুনাম ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সেই দল কীভাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংলিশ অফস্পিনার মঈন আলীকে ৬ উইকেট দিল।
ফর্মহীন ওপেনার শিখর ধাওয়ানের জায়গায় গৌতম গম্ভীরকে নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন গাঙ্গুলী। তবে যেহেতু ইংল্যান্ড ‘এখনো নাজুক’ অবস্থায় আছে তাই সাবেক অধিনায়ক মনে করেন ভারতের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।
৭ আগস্ট ওল্ড ট্রাফোর্ডে শুরু হবে চতুর্থ টেস্ট। এএফপি।
বিদায় জ্যাক ক্যালিস
[caption id="" align="alignleft" width="300"]
স্বপ্ন ছিল আরেকটি বিশ্বকাপ খেলবেন। তারপরই বিদায় জানিয়ে দেবেন ক্রিকেটকে। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই সরে দাঁড়ালেন জ্যাক ক্যালিস। গত ডিসেম্বরেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার এবার বিদায় বললেন ওয়ানডে ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকেও। পরশু সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দেওয়া সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারকে অবশ্য ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে আরও কিছুদিন দেখা যাবে।
শ্রীলঙ্কা সফরের ব্যক্তিগত ব্যর্থতাই ক্যালিসকে মত পাল্টাতে বাধ্য করেছে। শ্রীলঙ্কায় মাত্রই শেষ হওয়া ওয়ানডে সিরিজের তিন ম্যাচে ০, ১ ও ৪ রান। বিশ্বকাপটা যে দূরের বাতিঘর হয়ে গেছে, ক্যালিস সেটি বুঝতে পেরেই স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। গত ডিসেম্বরে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের সময় ২০১৫ বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেছিলেন ১৯৯৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত ক্যালিস।
বয়স হয়ে গেছে ৩৮। এরপর শ্রীলঙ্কায় এই ব্যক্তিগত বিপর্যয়। ক্যালিস বুঝে ফেলেছেন সময় হয়ে গেছে থামার, ‘শ্রীলঙ্কাতেই আমি বুঝতে পেরেছি আরেকটা বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন পূরণ হওয়া আমার কাছ থেকে যোজন যোজন দূরে সরে গেছে। তখনই বুঝতে পেরেছি আমি শেষ। শ্রীলঙ্কা সফর করা দলটা অসাধারণ, আমি বিশ্বাস করি আগামী মার্চে বিশ্বকাপটা দেশে নিয়ে আসার ভালো সুযোগ আছে তাদের।’
ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা, জাতীয় দল, দলীয় স্পনসর, ব্যক্তিগত স্পনসর ও ভক্তদের ধন্যবাদ জানানোর পর আরও কিছুদিন ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ক্যালিস, ‘যাত্রাটা অসাধারণ ছিল। তবে আমি সব ধরনের ক্রিকেট এখনই ছাড়ছি না, কারণ সিডনি থান্ডারের সঙ্গে আমার এখনো দুই বছরের চুক্তি আছে। এ ছাড়া সম্ভব হলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে আইপিএল শিরোপা ধরে রাখতে সাহায্য করার চেষ্টা করব।’
ক্যালিসের ওয়ানডে ক্যারিয়ারটা শঙ্কায় পড়ে যায় গত বছরই। প্রায় এক বছর নয় মাস ৫০ ওভারের ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন ক্যালিস। ব্যক্তিগত কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে না যাওয়া এই অলরাউন্ডার পরে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষেও ওয়ানডে সিরিজ খেলেননি। ঘরের মাঠে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে সিরিজে দলে ফিরলেও খুঁজে পাওয়া যায়নি পুরোনো সেই ক্যালিসকে। প্রত্যাবর্তনের পর সাত ম্যাচে ৫০ রানের ইনিংস খেলতে পেরেছিলেন মাত্র একবারই। এএফপি, ক্রিকইনফো।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার (১৯৯৫-২০১৪)
ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড় ১০০/৫০ উইকেট সেরা গড়
টেস্ট ১৬৬ ১৩২৮৯ ২২৪ ৫৫.৩৭ ৪৫/৫৮ ২৯২ ৬/৫৪ ৩২.৬৫
ওয়ানডে ৩২৮ ১১৫৭৯ ১৩৯ ৪৪.৩৬ ১৭/৮৬ ২৭৩ ৫/৩০ ৩১.৭৯
টি-টোয়েন্টি ২৫ ৬৬৬ ৭৩ ৩৫.০৫ ০/৫ ১২ ৪/১৫ ২৭.৭৫
ক্যালিসকে নিয়ে
তাঁর মতো ক্রীড়াবিদ প্রতি পাঁচ দশকে একবার আসে
হাশিম আমলা
আমাদের সময়ের গ্যারি সোবার্স
রাহুল দ্রাবিড়
সম্ভবত সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের অবসর। ক্রিকেট তোমার অভাব বোধ করবে
কেভিন পিটারসেন
একটা কথাই বলতে পারি অসাধারণ একজনের সঙ্গে খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল
গ্রায়েম স্মিথ
পরিসংখ্যানই তাঁর মূল্য বোঝানোর জন্য যথেষ্ট কিন্তু ড্রেসিংরুমে তাঁর উপস্থিতি ও তরুণদের শেখানোর ইচ্ছেটাও অনেক বড় কিছু ছিল
এবি ডি ভিলিয়ার্স
দক্ষিণ আফ্রিকা সৌভাগ্যবান, বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেট প্রতিভা জ্যাক ক্যালিসকে পেয়েছিল
হারুন লরগাত
মোহামেডানের দৃষ্টিকটু ব্যর্থতা
প্রিমিয়ার লিগ শেষে এই বোধোদয় হয়েছে দুজনেরই। তাঁদের জন্য আরও সুসংবাদ, নতুন মৌসুমে বিদেশি ফুটবলারের কোটা কমছে। খেলার মাঠে এবং ক্লাবের নিবন্ধনে—দুই ক্ষেত্রেই বিদেশি কমানো হবে। নতুন মৌসুম সামনে রেখে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন দুজনই।
এই লিগের ম্যাচ হয়েছে ১৩৫টি। ওঠেনি কোনো পাতানো ম্যাচের অভিযোগ, যা ফুটবলের জন্য সুখবরই।
পুরো মৌসুমেই কোচদের নিয়ে কম নাটক দেখেনি ফুটবল-দর্শকেরা। আবাহনীর অস্ট্রেলিয়ান কোচ নাথান হলের পদত্যাগ দিয়ে শুরু। মাঝপথে শেখ রাসেলের ট্রেবলজয়ী কোচ মারুফুল হক বরখাস্ত, অনেকটা নীরবেই শেখ জামালের নাইজেরিয়ান কোচ আপুসির বিদায়। শেষ পর্যন্ত মারুফুলের হাতেই শেখ জামালের দায়িত্ব দেওয়া। আবাহনীর ইরানি কোচ আলী আকবর পোরমুসলিমিও মৌসুম শেষ না করে ঢাকা ছেড়েছেন।
মৌসুমের শুরুতে যে প্রত্যাশা নিয়ে দল গড়েছিল মোহামেডান, তা পূরণ হয়নি তাদের। সাদা-কালোরা হয়েছে চতুর্থ। বড় অঙ্কের পারিশ্রমিক নিয়েও লিগে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে পারেননি জাতীয় দলের বড় নাম জাহিদ হোসেন, আরিফুল ইসলাম, জাহিদ হাসান এমিলিরা। তাঁরা ছিলেন নিষ্প্রভ। ক্লাব কর্মকর্তা ও সমর্থকদের নিরাশ করেছেন এই খেলোয়াড়েরা। মোহামেডানের চেয়ে কয়েক গুণ কম বাজেটের দল গড়েও মুক্তিযোদ্ধা তৃতীয় হয়েছে!
লিগে নবাগত দল উত্তর বারিধারা চমক দেখাল। পেশাদার লিগে এসে বুঝেছে এর নিষ্ঠুরতা। মাঠে ও মাঠের বাইরে পুরোপুরি ব্যর্থ দলটি অবনমিত হয়ে ফিরে গেছে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে।
এবারের লিগ তিন পর্বের হলেও ছিল না নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা। শেখ জামাল কোচ মারুফুল হক তাই ভবিষ্যতে বাফুফের লিগের সূচি করার আগে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিলেন, ‘লিগটা দীর্ঘমেয়াদি হয়েছে। বেশি ম্যাচ খেলা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। তবে বাফুফে যদি এএফসি, ফিফা, স্থানীয় স্কুল-কলেজ ও ধর্মীয় সূচি মেনে সূচি করে তাহলেই হয়তো লিগটা আরও আগে শেষ হতো। শেষ দিকে এসে একঘেয়ে হতো না।’
হারানো জায়গা ফিরে পাচ্ছেন ক্যাসিয়াস?
[caption id="" align="alignnone" width="795"]
রিয়াল মাদ্রিদের প্রতীকেই পরিণত হয়েছেন ইকার ক্যাসিয়াস। ১৯৯৯ সালে অভিষেকের পর বিশ্বস্ত হাতেই সামলেছেন রিয়ালের গোলপোস্ট। কিন্তু ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বশেষ দুটি মৌসুমে অনিয়মিতই হয়ে পড়েছিলেন এই স্প্যানিশ গোলরক্ষক। গত মৌসুমে খেলেছেন শুধুই চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে। লা লিগায় খেলেছিলেন ডিয়েগো লোপেজ। তবে এবারের মৌসুমে হয়তো হারানো জায়গাটা আবার ফিরে পেতে যাচ্ছেন এসময়ের অন্যতম সেরা এই গোলরক্ষক। রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলত্তি সম্প্রতি এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন।
১২ আগস্ট উয়েফা সুপার কাপের শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে রিয়ালের গোলরক্ষক হিসেবে ক্যাসিয়াসকেই বেছে নিয়েছেন আনচেলত্তি। এই ম্যাচটি দিয়েই শুরু হবে রিয়ালের এবারের মৌসুম। প্রথম একাদশে জায়গা হারানোর আশঙ্কায় লোপেজ রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে দিতে পারেন, এমন গুঞ্জনও উঠেছে ইউরোপিয়ান ফুটবল অঙ্গনে। তবে আনচেলত্তি এসব নিয়ে মোটেও ভাবছেন না। লোপেজ ক্লাব ছেড়ে যাবে, এমন কোনো কথাও নাকি তাঁর কানে যায়নি। তিনি বলেছেন, ‘লোপেজ ঠিকঠাকই আছে। অনুশীলনও করছে। তার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে সে খেলবে না কারণ আমি ক্যাসিয়াসকেই খেলার সুযোগ দিতে চাই। উয়েফা সুপার কাপে ক্যাসিয়াস খেলবে। কিন্তু আমি এখনো লোপেজের ওপর ভরসা রাখছি।’
তাহলে কি এবারও লা লিগায় লোপেজ আর চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচগুলোতে ক্যাসিয়াসকে খেলাতে যাচ্ছেন আনচেলত্তি? এ ব্যাপারে এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলেননি রিয়াল কোচ।
এদিকে ব্রাজিল বিশ্বকাপে ভালো পারফরম্যান্স দেখানো কোস্টারিকার গোলরক্ষক কেইলর নাভাসও নাকি যোগ দিতে পারেন রিয়াল মাদ্রিদে। সত্যিই যদি তেমনটা ঘটে তাহলে গোলপোস্টের নিচের জায়গাটার জন্য ভালোই লড়াই চলবে রিয়াল শিবিরে।
ফুটবলের অভিশাপ, অভিশাপের ফুটবল
[caption id="" align="alignleft" width="300"]
‘আমি অভিশাপ দিয়ে গেলাম, আগামী ১০০ বছরেও তোমরা কোনো ইউরোপীয় কাপ জিততে পারবে না’—বেলা গুটমানের এই অভিশাপের রাহু এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে বেনফিকা। ষাটের দশকে পর্তুগিজ ক্লাবকে টানা দুবার ইউরোপিয়ান কাপ জিতিয়েছিলেন গুটমান। কিন্তু বেতন-ভাতা নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় হাঙ্গেরিয়ান কোচ ক্ষিপ্ত হয়ে ওই অভিশাপ দিয়ে যান। বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, এরপর আটবার ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারেনি বেনফিকা। গত মৌসুমেই সেভিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে তারা জানিয়ে দিল, গুটমানের ভূত এখনো জেঁকে বসে আছে মাথার ওপর।
সংস্কার, বাতিকগ্রস্ততা—এসব ফুটবলের অংশই। অন্ধবিশ্বাসের কানাগলি দিয়ে কখনো চুপিচুপি ঢুকে পড়ে অভিশাপের ছায়া। আর কিছু অভিশাপ এমনভাবেই ফলে যায়, মনে হয় সেগুলো বুঝি আর কখনোই কাটবে না। গুটমানের অভিশাপটাই দেখুন, তাঁর কথা ঠিক হলে বেনফিকাকে আরও ৪৭ বছর অপেক্ষা করতে হবে। অথচ বেনফিকা কদিন আগে নিজেদের স্টেডিয়ামের সামনে গুটমানের মূর্তি উন্মোচন করেছে। কাজ হয়নি তাতে, অন্যলোকে বসে সেদিকে তাকিয়ে হয়তো মুচকি হসেছেন গুটমান!
তবে বেনজামিন উরিয়া অতটা ‘পাষাণ হৃদয়’ ছিলেন না। ১৯৪৮ সালে কলম্বিয়ান ক্লাব আমেরিকা ডি কালি সিদ্ধান্ত নিল, তারা পেশাদার হবে। কিন্তু সে সময় বোর্ডের সদস্য উরিয়া বেঁকে বসলেন, ‘আপনারা আমেরিকাকে নিয়ে যা ইচ্ছা তা করতে পারেন, কিন্তু আমি ঈশ্বরের কাছে শপথ করে বলছি, দলটি কখনো চ্যাম্পিয়ন হবে না।’ শুরুতে কথাটাকে ‘প্রলাপ’ বলেই সবাই উড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু পরের তিন দশকেও যখন আমেরিকা কোনো ট্রফি জিততে পারল না, বোঝা গেল অভিশাপটা লেগে গেছে।
তবে উরিয়া সত্যি সত্যিই আমেরিকাকে ভালোবাসতেন। ১৯৭৮ সালে জাগযজ্ঞ করে শাপমোচনের ব্যবস্থা করলেন। ব্যাপারটা কাকতাল বা অন্য কিছু বলতে পারেন, পরের বছরই শিরোপা জিতল আমেরিকা।
বার্মিংহাম সিটির অভিশাপটা আবার একটু অন্য রকম। ১৯০৬ সালে ইংলিশ ক্লাবটি মুন্টজ স্ট্রিট থেকে তাদের স্টেডিয়াম সেন্ট অ্যান্ড্রুজে নিয়ে যায়। তাতে স্থানীয় বেশ কয়েকটি জিপসি পরিবারকে উচ্ছেদ করতে হয় বার্মিংহামকে। যাযাবর জিপসিরা ঠিক কী তুকতাক করেছিল তা কারও জানা নেই, কিন্তু বার্মিংহাম যেন এরপর ট্রফি জেতা ভুলেই গেল। ১৯৬৩ ও ২০১১ সালে লিগ কাপ ছাড়া সেই অর্থে তেমন কোনো বড় শিরোপা জিততে পারেনি।
শাপমোচনের জন্য কি কম চেষ্টা করেছে বার্মিংহাম? ক্লাবের সাবেক দুই কোচ রন সন্ডার্স স্টেডিয়ামে পবিত্র ক্রুস ঝুলিয়ে চেষ্টা করেছিলেন রাহুমুক্ত করার। লাভ হয়নি। ১০ বছর পর ব্যারি ফ্রাই যা করলেন সেটা অবশ্য সব পাগলামিরও বাড়াবাড়ি। মাঠের চার কোণে মূত্রত্যাগ করে শাপমোচনের চেষ্টা করলেন! কিন্তু কাজ হয়নি তাতেও, শেষ পর্যন্ত চাকরি হারাতে হলো ব্যারিকে। আর বার্মিংহামও এখন প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হয়ে খেলছে দ্বিতীয় বিভাগে।
একই রকম সমস্যায় পড়েছিল ডার্বি কাউন্টিও। নতুন স্টেডিয়াম থেকে রোমান যাযাবরদের উচ্ছেদের পর অভিশাপ পড়েছিল তাদের ওপর। পরের ছয় বছরে তিনবার এফএ কাপের ফাইনালে উঠেও হেরে যায় তারা। শেষ পর্যন্ত ১৯৪৬ সালে ক্লাব অধিনায়ক জ্যাক নিকলসন ক্ষমা চেয়ে আসেন যাযাবরদের কাছে। ফলটা আসে হাতেনাতেই, ওই বছরই চার্লটনকে হারিয়ে জেতে এফএ কাপ।
অস্ট্রেলিয়ার কাহিনিটা আরও মজার। ১৯৭০ বিশ্বকাপে খেলার জন্য সকারুরা এতই মরিয়া ছিল যে, কালো জাদু বা ভুডুর আশ্রয় নেয়। বাছাইপর্বে জিতল একটা ম্যাচও। এরপর ওঝা দাবি করে বসল টাকা। কিন্তু সেটা না পাওয়ায় ওঝা অভিশাপ দিলেন অস্ট্রেলিয়াকে। সেবার বিশ্বকাপের মূল পর্বে ওঠা হলো না অস্ট্রেলিয়ার। পরের বিশ্বকাপে খেললেও আবার দীর্ঘ বিরতি। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার এক তথ্যচিত্র নির্মাতা সেই অভিশাপ খণ্ডানোর জন্য আফ্রিকায় যান। ২০০৬ বিশ্বকাপে আবার বিশ্বকাপে খেলতে পারে অস্ট্রেলিয়া। ফিফাডটকম।
উচ্ছ্বসিত নন ক্যানাভারো
মেসি, নেইমার, সুয়ারেজ—একসঙ্গে এই তিনজন খেললে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভয়ের স্রোত বয়ে যাওয়ার কথা। এই মৌসুমেই বার্সেলোনায় এই ত্রিফলা দেখা যাবে। একসঙ্গে তাঁরা কত দূর কী করতে পারবেন, সেটা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু ফ্যাবিও ক্যানাভারো ঠিক এই ত্রয়ী নিয়ে ততটা উচ্ছ্বসিত নন। ব্যালন ডি’অরজয়ী ইতালির সাবেক মিডফিল্ডার উল্টো প্রশ্ন করেছেন, ‘আমরা তো আধুনিক ফুটবলের কথা বলছি, নাকি? মধ্যমাঠে তো কাউকে ওদের জন্য খেলতে হবে।’
এ কারণেই লা লিগায় বার্সেলোনার খুব একটা সম্ভাবনা দেখছেন না ক্যানাভারো। রিয়াল মাদ্রিদকেই এগিয়ে রাখছেন, ‘লা লিগায় এবার রিয়াল মাদ্রিদই ফেবারিট।’ ২০০৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিন মৌসুমে রিয়ালের হয়ে দুবার লা লিগা জিতেছিলেন ক্যানাভারো। গোলডটকম।
কান্নায় ভেঙে পড়লেন সানিয়া মির্জা
[caption id="" align="alignleft" width="485"]
মুম্বাই, ২৬ জুলাই- ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভিকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে সানিয়া মির্জা বলেন, 'আর কী করলে প্রমাণিত হবে যে আমি একজন ভারতীয়!' এ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই টেনিস তারকা।
সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির এক সংসদ সদস্যের মন্তব্যের পরপরই এনডিটিভিকে একথা বলেন সানিয়া। নবগঠিত তেলেঙ্গানা রাজ্যের 'ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর' হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরপরই সেই সংসদ সদস্য অভিযোগ করে বলেন, এই সানিয়া পাকিস্তানের গৃহবধূ। তার তেলেঙ্গানার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। এই রাজ্য গঠনের আন্দোলনের সঙ্গে তার কোনো আত্মিক সম্পর্ক নেই।
সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে সানিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সংসদ সদস্যের এই মন্তব্য আমাকে নিদারুণ আহত করেছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে ভারতে জন্ম নিয়ে, ভারতে সারাটা জীবন কাটিয়েও আমাকে প্রমাণ করতে হচ্ছে আমি আদৌ ভারতীয় কি না।
পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিককে বিয়ে করার পর থেকেই ভারতীয়দের একাংশের কাছে সমালোচিত সানিয়া মির্জা। রাজনীতিতে 'চিরশত্রু' পাকিস্তানের 'বধূ' হওয়ার ব্যাপারটি ভারতীয় কট্টরপন্থীরা কখনোই মেনে নিতে পারেননি। আর সে কারণে প্রায়ই সানিয়াকে উগ্র সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে।
বিরক্তি ও হতাশা নিয়ে এনডিটিভিকে সানিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকেই পারিবারিকভাবে আমি জাতি-ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে ভাবতে শিখেছি। অন্য জাতি বা ধর্মের কারও সঙ্গে কথা বলা বা মেশার সময় এসব কখনোই আমার মাথায় থাকে না। শোয়েবের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সময়ও এসব নিয়ে আমি ভাবিনি। এসব নিয়ে কথা ওঠাটা সত্যিই দুঃখজনক।
পর্দা উঠলো গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসের
[caption id="" align="alignnone" width="800"]
গ্লাসগো, ২৪ জুলাই- ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবলের আমেজ কাটতে না কাটতেই বুধবার থেকে শুরু হয়েছে এবারের কমনওয়েলথ গেমস। স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোর সেল্টিক পার্কে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠলো বিশতম কমনওয়েলথ গেমসের। বুধবার রাতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৪০ হাজার দর্শকের সামনে গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ।
এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে ৭১টি দেশ। ১৭টি ডিসিপ্লিনে ২৬১টি স্বর্ণের লড়াইয়ে প্রায় ৪৫০০ অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছেন।
কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেন শুটার শারমিন আক্তার রত্না। বাংলাদেশ ১০টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিচ্ছে। সেগুলো হলো শুটিং, সাঁতার, টেবিল টেনিস, ভারোত্তোলন, ব্যাডমিন্টন, সাইক্লিং, জিমন্যাস্টিকস, অ্যাথলেটিকস, কুস্তি ও বক্সিং।
১৯৩০ সালে বৃটিশ এম্পায়ার গেমস নামে এ ক্রীড়া আসর চালু হয়। ১৯৫৪ সালে নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখা হয় ব্রিটিশ এম্পায়ার অ্যান্ড কমনওয়েলথ গেমস। ১৯৭০ সালে বৃটিশ কমনওয়েলথ গেমস এবং ১৯৭৪ সালে নামকরণ হয় কমনওয়েলথ গেমস।
প্রায় ১২ বছর আগে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই শহরে। তবে স্কটল্যান্ডে এর আগে ১৯৭০ ও ১৯৮৬ সালে দু’বার কমনওয়েলথ গেমস অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আগের ১৯টি আসরে পদক তালিকার শীর্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া ১১বার, ইংল্যান্ড সাত ও কানাডা একবার।
ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, স্কটল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং ওয়েলস এই ছয়টি দেশ কমনওয়েলথ গেমসের সব আসরে অংশ নিয়েছে।
এবারের গেমসে পদক লড়াইয়ের খেলাগুলো হচ্ছে- অ্যাথলেটিকস, সাঁতার, ব্যাডমিন্টন, বক্সিং, সাইক্লিং, জিমন্যাসটিকস, হকি, জুডো, লনবল, নেটবল, রাগবি, শুটিং, স্কোয়াশ, টেবিল টেনিস, ট্রায়াথলন, ভারোত্তোলন, প্যারা স্পোর্টস এবং কুস্তি। বাংলাদেশ এর ১০টিতে অংশ নিচ্ছে।
অভিযোগ নিয়েও সতীর্থদের মাঝে ফিরতে চান নেইমার
[caption id="" align="alignnone" width="633"]
চলচিত্রভিত্তিক একটি টেলিভিশন শো’তে অংশ নেওয়া ব্রাজিলের ফুটবল তারকা নেইমার বর্তমানে রয়েছেন জাপানের টোকিওতে। সেখানেই তিনি জানালেন, দ্রুত বার্সেলোনার অনুশীলনে ফিরবেন তিনি।
যদিও বিমানের শিডউল বিপর্যয়ের কারণে নির্ধারিত সময়ের একদিন পরে সেখানে গিয়েছেন নেইমার। তারপরও তাকে এক নজর দেখার জন্য টোকিও বিমান বন্দরে হাজির হয়েছিলেন হাজার হাজার ফুটবল সমর্থকরা।
বিমান বন্দরে সমর্থকদের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি পিঠের ইনজুরি কাটিয়ে উঠছি খুব দ্রুত। অনুশীলনে ফেরার জন্য আমি শতভাগ সুস্থ হয়ে উঠেছি। তাই দ্রুত সতীর্থদের কাছে ফিরে যেতে পারব।’
২২ বছর বয়সী এ তারকা স্ট্রাইকার আরো বলেন, ‘আশা করছি দারুণ একটি মৌসুম অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। বার্সেলোনার হয়ে শিরোপা জয়ই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এমনকি ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়েও ভাল করতে চাই।’
ইনজুরিতে পড়ার পর পূণর্বাসন প্রক্রিয়ার সুযোগে বিশ্বভ্রমণে খোস মেজাজে থাকলেও নেইমার ফেঁসে যেতে পারেন কর ফাঁকির অভিযোগে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, বার্সেলোনার সঙ্গে ট্রান্সফারেন্সির অর্থের পরিমান কম দেখিয়ে কর ফাঁকি দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
ক্যাম্প ন্যূ’তে মেক্সিকোর লিওনের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মাঠে নামতে পারেন নেইমার। আগামী ১৮ আগস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
দশ টেস্ট পর জয় পেল ইংলিশরা
স্কোর
ইংল্যান্ড: ৫৬৯/৭ (ডিক্লেয়ার্ড) এবং ২০৫/৪ (ডিক্লেয়ার্ড)
ভারত: ৩৩০/১০ এবং ১৭৮/১০
ফল: ইংল্যান্ড জয়ী ২৬৬ রানে
জয়ের জন্য ৪৪৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে পঞ্চম দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৭৮ রানে গুটিয়ে যায় ধোনীবাহিনী। শেষ দিনে চার উইকেট হারিয়ে ১১২
রান নিয়ে খেলতে নামে ভারত। কিন্তু মঈন আলী ও অ্যান্ডারসনের বোলিং তোপে পড়ে অতিথীরা।
ভারতের পক্ষে ব্যাক্তিগত ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন অজিঙ্কা রাহানে।
এ জয়ের ফলে দশ টেস্ট পরে সাদা পোষাকে জয়ের স্বাদ পেল ইংলিশরা। দুই ইনিংসে ৮ উইকেট নেওয়া মঈন আলীকে রেখে ৭ উইকেট নেওয়া অ্যান্ডারসনকে ম্যাচ সেরা ঘোষণা করা হয়।
সিরিজের পরের টেস্টটি শুরু হবে ৭ আগস্ট।
[caption id="attachment_70" align="alignnone" width="353"]
No comments:
Post a Comment
Thank you very much.