লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহযোগী অধ্যপক ড. হাসান শহীদ। সুইজারল্যান্ডের সোলার ইমপালস ও নাসার পার্থ ফাইন্ডারসহ সোলার প্যানেলের অনেক প্রজেক্ট থাকলেও বাঙালি ড. হাসানের হাত ধরেই তৈরি হলো বিশ্বের প্রথম সোলার হেলিকপ্টার। তবে তার সঙ্গে ছিলেন আরো এক বাংলাদেশি বংশদ্ভূত। তিনি হলেন- সাকির আহমেদ।
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার হানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ড. হাসান শহীদ। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ডিগ্রি অর্জন করেছেন বরিশাল ক্যাডেট কলেজে। এরপর গ্রাজুয়েশন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স, ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। এরপর পিএইচডি করেছেন যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
এ বিষয়ে ড. হাসান বলেন, বর্তমান বিশ্বে এনার্জির একটা সংকট চলছে। এ অবস্থায় আমাদের চিন্তা ছিল কীভাবে সোলার হেলিকপ্টার তৈরি করা যায়। এক্ষেত্রে আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল কোনো ব্যাটারি ছাড়া শুধু মাত্র সোলার পাওয়ার দিয়ে কীভাবে হেলিকপ্টারটি চালানো যায়। এই চ্যালেঞ্জে আমরা জয়ী হই এ বছরের মার্চে।
প্রথম দিকে শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে সোলার হেলিকপ্টার ব্যবহার হলেও ভবিষ্যতে তা প্রসারের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানী হাসান। কুইন মেরিতে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত সাত শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে উদ্ভাবিত সোলার হেলিকপ্টারটি স্বীকৃতি (প্রুফ অব কনসেপ্ট) পেয়েছে।
দলের কো-ইনভেটর মিয়ার্সকাজ বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এটির বাণিজ্যিক উৎপাদনে আর বেশি দেরি নেই।
বিশ্বের বিকল্প জালানি হিসেবে সোলার প্যানেল বহুদিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসলেও সোলার হেলিকপ্টারটি তৈরি করেছে নতুন ইতিহাস। আর এই ইতিহাসের সাথে বাংলাদেশের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সূত্র চ্যানেল আই।
বাংলাদেশী আয়েশা উদ্ভাবন করলেন কৃত্রিম মানব ফুসফুস
বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের বিজয় রথ এগিয়ে চলেছে। এবারের সাফল্য এসেছে একজন তরুণ নারী বিজ্ঞানীর হাত ধরে। আয়েশা আরেফিন টুম্পা ন্যানো-প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করেছেন কৃত্রিম মানব ফুসফুস। যে কারণে বিষয়টি আরো বেশি আনন্দের। কারণ, বাংলাদেশ দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই দেশগুলোর মাঝে একটি যেখানে নারী বিজ্ঞানীদের সংখ্যা অনেক কম। অনেক মেয়েরই স্বপ্ন থাকে বিজ্ঞানী হবার। কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা আর অনেক ক্ষেত্রে প্রচলিত অনেক কুসংস্কার মেয়েদের এই স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এত বাঁধা-বিপত্তির মাঝেও অনেক মেয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের স্বপ্নের পথে।
২০১১ সালে আমেরিকার আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরির গবেষক ক্রিস ডেটার বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত এক কাজে এসে এরকমই এক সম্ভাবনাময় জিনবিজ্ঞানী আয়েশা আরেফিনের দেখা পান। ডেটার ও তাঁর সহকর্মী ল্যান্স গ্রিনের একান্ত সহযোগিতার ফলেই আয়েশা লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরিতে উচ্চতর পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ পান। আয়েশা তার যুক্তরাষ্ট্রের জীবনের প্রথম দিন গুলোতে ডেটারের বাড়িতেই থাকতেন। আয়েশা আরেফিন, যার ডাক নাম টুম্পা বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব নিউ মেক্সিকোতে ন্যানো-সায়েন্সের উপর ডক্টরেট করছেন। একই সাথে লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরিতে চলছে তাঁর গবেষণা।
আয়েশা তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেন লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরির বায়ো-সিকিউরিটি বিভাগে। এরপরেই ঐ ল্যাবের ভারতীয় গবেষক প্রখ্যাত টক্সিকোলজিস্ট রাশি আইয়ার আয়েশাকে অপ্টোজেনিক্স সঙ্ক্রান্ত গবেষণা কাজের জন্য নিয়োগ দেন। অপ্টোজেনিকস হচ্ছে জিন-বিদ্যা ও প্রোটিন প্রকৌশল(ইঞ্জিনিয়ারিং) এর মাধ্যমে জীবন্ত টিস্যুর মাঝে ঘটতে থাকা বিভিন্ন স্নায়বিক কাজ (neuron activity) নিয়ন্ত্রণ করা। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও কৃত্রিম টিস্যু বা কলা তৈরি করা সম্ভব।
আয়েশা ও রাশি আয়ারের দলের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট বিষক্রিয়া, রোগ ও কৃত্রিম অংগ সংস্থাপনের জন্য সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন। তাঁরা একটি কৃত্রিম মানব ফুসফুস তৈরি করেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, Chronic Obstructive Pulmonary Disease এর সময় ফুসফুসের কোষগুলো কিভাবে কাজ করে তা জানা ও এর প্রতিষেধক উদ্ভাবন করা।। এটি হচ্ছে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভয়াবহ রোগ যাতে আমেরিকার অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। আয়েশা একই সাথে বিভিন্ন স্নায়বিক ব্যাধি ও মস্তিষ্কে রক্ত-ক্ষরণ নিয়েও গবেষণা করছেন।
বাংলাদেশী বিজ্ঞানী আয়েশা আরেফিন টুম্পা ভবিষ্যতে দেশে ফিরে এসে মানুষের জন্য কাজ করতে আগ্রহী। দেশে থাকাকালীন সময়ে তিনি নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি এইচ আই ভি/এইডস নিয়ে পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও কাজ করেছেন। তাঁর ইচ্ছা দেশে এসে নিজের বাড়িতে একটি স্কুল খোলার। যেখানে যে কোন শিশু বিজ্ঞান ও গণিত পড়ার সুযোগ পাবে।
আয়েশা আন্তরিকভাবেই বিশ্বাস করেন ভাগ্য ও আশেপাশের কিছু মানুষের সহযোগিতা ছাড়া তাঁর এই সাফল্য আসতো না। তিনি বলেন, “ আমি আমার গবেষণাগারের, এর মানুষগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি আনন্দিত যে ব্যতিক্রম কিছু করার সুযোগ পেয়েছি”। তিনি আরো বলেন লস আলামসে কর্মরত অন্য অনেক দেশের গবেষক বিশেষ করে মন্টেনিগ্রোর গবেষক Momo Vuyisich তাঁর জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
গণিতপণ্ডিত সাজ্জাদের নতুন ১৪ সূত্র
গণিত জটিল একটি বিষয়। একটু গোলমাল হলেই সব গুলিয়ে যায়। এরপর শুরু হয় খাতার পৃষ্ঠা কাটাকাটি। আর কাটাকাটি করতে করতে সময়ও হয়ে যায় নষ্ট। অনেক সূত্র তো আবার মাথাতেই ঢোকে না। সূত্রের মার-প্যাঁচ আর কৌশলের চাপে গণিতের সমাধানটি প্রায় মুখস্থ বিদ্যায় পরিণত হয়।
কিন্তু কথায় বলে সমস্যা যেখানে সমাধানও সেখানে। তাই সমস্যা দিনের পর দিন থাকে না। এর সমাধানে কেউ না কেউ এগিয়ে আসবেই।
কিশোরগঞ্জ করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া গাংপাড়ার সাজ্জাদ আলম। চেষ্টা আর ইচ্ছাশক্তি যার প্রবল। একদিন অনুভব করলেন গণিত সূত্র নিয়ে যদি অন্যরকম চর্চা করা যায়। আর তার সমাধানে আরো কিছু নতুন সূত্র যদি প্রয়োগ করা যায় তবে বিষয়টি মন্দ হয় না। তাই রীতিমতো নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে দিনের পর দিন সাধনা শুরু করলেন। একে একে গণিত সম্রাট যাদবের আদলে গণিতশাস্ত্রের ১৪টি নতুন সূত্র উদ্ভাবনও করে ফেললেন। আর তাতেই রীতিমতো সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন।
সাজ্জাদ অনুপাত-সমানুপাতের মতো সংশ্লিষ্ট ১৪টি নতুন সূত্র উদ্ভাবন করে বুঝিয়ে দিলেন কঠোর ইচ্ছা আর প্রবল ধৈর্যশক্তি থাকলে সবই সম্ভব। সাজ্জাদ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় এমনিতেই সময় কম থাকে আর প্রচলিত সূত্র দিয়ে অঙ্কগুলো সমাধান করা হয় তবে সব উত্তর দেয়া অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেই তখন এমন সমস্যায় পড়েছিলাম। তাই আমি নিজেই অনুভব করেছি কিছু নতুন সূত্র প্রয়োজন যাতে অঙ্কগুলো সহজে করা যায় এবং সময়ও বাঁচে। আর এরপর থেকেই আমার এ প্রচেষ্টা।
গণিত শাস্ত্রের নতুন সূত্র নিয়ে কাজ করা সাজ্জাদ ১৯৯৮ সালে ভাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়া শেষে ভাটিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ২০০৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং করিমগঞ্জ মহাবিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ ঈশা খাঁ ইউনির্ভাসিটিতে বিবিএতে পড়ছেন।
বাবা আলী আক্কাছ আর মা জোছনা আক্তারের বড় ছেলে তিনি। বাবা পেশায় রেলওয়ে স্টেশনে নিরাপত্তা প্রহরী। তার যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। তারপরও সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য দিনের পর দিন কষ্ট করে যাচ্ছে।
সাজ্জাদ বাবার কষ্ট একটু কমাতে টিউশনি করান। তাতে নিজের খরচটা বাবার কাছ থেকে নিতে হয় না। আর এর পাশাপাশি কম্পিউটার বিজ্ঞানে আগ্রহ থাকায় ২০১০ সালে যুব উন্নয়ন কার্যক্রম থেকে অ্যাপ্লিকেশন কোর্সও সম্পন্ন করেন।
২০১১ সালে সাজ্জাদ সূত্রগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ গণিত সমিতিতে পাঠান। সূত্রগুলো সঠিক বলে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১২ সালে কোনোরকম সংশোধন পরিমার্জন ছাড়াই সমিতি তাদের বার্ষিক প্রকাশনা ‘গণিত পরিক্রমা’র একবিংশ খণ্ডে প্রকাশ করে।
সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, সাজ্জাদের আবিষ্কৃত সূত্রগুলো গণিতশাস্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাজ্জাদের গণিতের সূত্রগুলো স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকের উপযোগী মৌলিক উপাদান হিসেবে কাজ করবে। বিদ্যালয় থেকে উচ্চতর পর্যায় পর্যন্ত গণিত শিক্ষার বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
বর্তমানে পাটিগণিতে গণিতসম্রাট যাদবের অনুপাত-সমানুপাত বিষয়ক তিনটি সূত্র রয়েছে। কিন্তু অনুপাতের পরিধি এত ব্যাপক যে, সব অঙ্ক সমাধানের জন্য এ তিনটি সূত্রই যথেষ্ট নয়। এমন অনেক অঙ্ক আছে যা এগুলোর সাহায্যে সমাধান করা যায় না। এ ধরনের অঙ্ক প্রচলিত পদ্ধতিতে এক চলক বিশিষ্ট গাণিতিক খোলা বাক্যের সাহায্যে সমাধান করা হয় যা কম্পিউটারের এমএস এক্সেলে ব্যবহার উপযোগী নয়। এ সঙ্কট নিরসনে সাজ্জাদের আবিষ্কৃত সূত্রগুলোর মাধ্যমে অঙ্কগুলো সমাধান করা হলে কম্পিউটারের এমএস এক্সেল ব্যবহার উপযোগী হবে। পাশাপাশি সূত্রগুলো প্রয়োগ করে ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা অনুশীলনী ১১.২-এর অঙ্কগুলো অপেক্ষাকৃত সহজে ও স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাধান করতে পারবে।
সাজ্জাদ আলম বলেন, তার প্রযুক্তিজ্ঞান কাজে লাগাতে ভবিষ্যতে তিনি সফট্ওয়্যার নিয়ে কাজ করতে চান। নতুন নতুন গাণিতিক সূত্র উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে দেশে আইটি সেক্টরকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। তিনি আরো বলেন, জাতীয়ভাবে এ সূত্র আবিষ্কারের একটি স্বীকৃতিও পেয়েছি। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে এ গবেষণা চালিয়ে যেতে চাই। তাই বিভিন্ন সংগঠনের সহযোগিতায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সংযোগ ছাড়াই দেখা যাবে দেশি-বিদেশি সব টিভি চ্যানেল
কেবল (তার) ছাড়াই বাড়িতে বসে সরাসরি টেলিভিশন দেখার প্রযুক্তির মাধ্যমে দেখা যাবে দেশি ও বিদেশি সব টেলিভিশন চ্যানেল।
ডিরেক্ট-টু-হোম (ডিটিএইচ) প্রযুক্তির মাধ্যমে বাড়িতে বসেই গ্রাহকযন্ত্রের মাধ্যমে দেশি ও বিদেশি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল দেখা যাবে।
বেক্সিমকো কমিউনিকেশনস লিমিটেড এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়।
এ উপলক্ষে বুধবার বেক্সিমকোর প্রধান কার্যালয়ে বেক্সিমকো কমিউনিকেশনস লিমিটেডের সঙ্গে রাশিয়ার জিএস কোম্পানির চুক্তি সই হয়।
এ বিষয়ে বেক্সিমকো কমিউনিকেশনস জানায়, ২০১৪ সালের শেষের দিকে তারা এই প্রযুক্তির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করবে। প্রতি বছর চার লাখ নতুন গ্রাহকের কাছে সেবা পৌঁছানোর প্রাথমিক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে কোম্পানিটি। তবে যাত্রা শুরুর প্রথম বছরেই তিন লাখ গ্রাহক এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, প্রতি বছর চার লাখ নতুন গ্রাহকের কাছে সেবা পৌঁছানোর প্রাথমিক লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে বেক্সিমকো কমিউনিকেশনস লিমিটেড। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বেক্সিমকোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব করছে রাশিয়ার জিএস গ্রুপ নামে বৃহৎ শিল্প ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, (ডিটিএইচ) সুবিধা পেতে গ্রাহককে সম্প্রচার কোম্পানি একটি ডিশ ও রিসিভার সেট প্রদান করবে যা, ওই ডিশের মাধ্যমে সিগন্যাল গ্রহণ করে রিসিভিং সেটের সাহায্যে বিভিন্ন চ্যানেল টেলিভিশন সেটে দেখা যাবে। এভাবে গ্রাহক তার কাঙ্ক্ষিত চ্যানেলগুলো দেখতে পারবেন।
সুবিধা হচ্ছে, গ্রাহক পছন্দ করা চ্যানেলগুলো বাছাই করতে পারবেন। কেবল (তার) সংযোগের মাধ্যমে পাওয়া ছবির চেয়ে এর মান হবে অনেক উন্নত। কেবলের মাধ্যমে টিভি দেখার সময় সিগন্যাল ব্রেক হয়। ডিটিএইচ প্রযুক্তিতে সিগন্যাল ব্রেক হবে না। উন্নতমানের সেবা পাওয়া যাবে। গ্রাহক তার পছন্দ মতো চ্যানেল কিনে মাসিক খরচ কমিয়ে আনতে পারবেন।
মোবাইলে কল করলে খুলবে দরজা-জানালা
ধুনট (বগুড়া) থেকে: পুরো বিশ্ব এখন একটা গ্রামে পরিণত হয়েছে। ডিজিটাল যুগ নিরাপত্তার আরও একধাপ এগিয়ে এবার মোবাইলে কল দিয়েই ঘরের জানালা-দরজা খোলা যাবে।
আধুনিক প্রযুক্তির যুগে মোবাইল ফোনের নানামুখী ব্যবহারের সঙ্গে যোগ হলো ঘরের জানালা-দরজা খোলা ও বন্ধ করার বিষয়টিও। যে কোনো স্থান থেকে মোবাইল ফোনে কল করে তা পরিচালনা করা যাবে।
অভাব অনটনের সংসারে কৃষক ঘরে জন্ম মেধাবী কলেজ ছাত্র মো. হুজাইফা খান সম্রাট (১৭)। বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের বহালগাছা গ্রামের খয়রুজ্জামান খানের ছেলে। মা রেখা খাতুন। দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্রাট ছোট।
পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী কওমী মাদ্রাসা থেকে সম্রাটের শিক্ষা জীবন শুরু। এরপর বাড়ির পাশে খান বাহাদুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল পাশ করেন। বর্তমানে ধুনট উপজেলার নৎরতপুর হাজী কাজেম-জোবেদা টেকনিক্যাল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন তিনি।
লেখাপড়ার পাশাপাশি ধুনটে বিশ্ব হরিগাছা বাজারে সরকার মার্কেটে নিজের দোকানে মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ করেন। আর সে আয় থেকে পড়ালেখার খরচ যোগান সম্রাট। ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিলো কিছু আবিষ্কারের। বয়স ১১ বছর না যেতে না যেতেই ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হিসেবে মানুষের বাসা-বাড়িতে কাজ শুরু করেন। তার ওস্তাদ তিনি নিজেই। একই ভাবে অন্যের দেখে আয়ত্ব করে ফেলেন মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ।
কাজের ধারাবাহিকতায় আবিষ্কারের চিন্তায় দুই বছর আগে স্বপ্ন দেখেন মোবাইল ফোনের নেটওর্য়াকের মাধ্যমে নতুন কিছু করার। ভাবনার জগতে ডুবে যান সম্রাট, মাথায় আসে রিমোট কন্ট্রোলের মতো মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যায় কি-না।
যেই ভাবনা সেই কাজ। মোবাইল ফোনের ব্যবহার করে ঘরের জানালা-দরজা খোলা ও বন্ধ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তিনি। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারের সাহায্যে নতুন একটি সফটওয়্যার আবিষ্কার করে তা মোবাইলে ইনস্টল করে সফল হন তিনি।
পরীক্ষামূলক ভাবে সম্রাট দুইফুট দৈর্ঘ্য, একফুট প্রস্থ্য ও এক ফুট উচ্চতা সম্পন্ন একটি কাচের ঘর তৈরি করেন। সেই ঘরের দরজাও কাচের। মোবাইল ফোনে সিম লাগিয়ে ঘরের ভিতর দরজার সঙ্গে আটকানো হয়।
সিমকার্ডে রয়েছে গোপন পিন কোড। নিজের মোবাইল থেকে দরজায় লাগানো মোবাইল নম্বরে পিনকোড ব্যবহার করে কল দিলে সহজেই খুলে যায় দরজার পাল্লা।
আবার প্রয়োজন অনুযায়ী কল করলে একই পদ্ধতিতে তা বন্ধ হয়ে যায়। দরজা খুলতে বা বন্ধ হতে সময় লাগে মাত্র ৩০ সেকেন্ড। তবে পদ্ধতি সচল রাখতে সার্বক্ষণিক বিদ্যুত সংযোগ থাকা আবশ্যক। এ পদ্ধতি আবিষ্কার করতে তার প্রায় ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। যেকোনো ঘরে কাঠ, স্টিল, কাচ কিংবা অন্যান্য সামগ্রীর তৈরি দরজায় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে।
এদিকে সম্রাটের কাজ দেখতে প্রতিদিন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হাজারো কৌতূহলী মানুষ ভিড় করছেন।
হুজাইফা খান সম্রাট জানান, এই আবিষ্কারের পেছনে অন্য কারো সহযোগিতা নেই। কাউকে অনুকরণ কিংবা অনুসরন করেও নয়, বরং নিজের চেষ্টায় আল্লাহ তাকে এই সফলতা দিয়েছেন।
সম্রাট বলেন, ঘরে দরজা ব্যবহারযোগ্য করে তৈরি করতে ব্যয় হবে প্রায় ১ লাখ টাকা। অধিক চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে এই ব্যয় কমানো সম্ভব। তবে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তা দেখতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে এই পদ্ধতি বাজারজাত করার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।
No comments:
Post a Comment
Thank you very much.