google-site-verification: googlefee13efd94de5649.html ছবি আঁকব বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলাম - তারুণ্যের কন্ঠস্বর

HeadLine

News Update :

Friday, October 17

ছবি আঁকব বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলাম

তাঁরা আমাদের খুবই পরিচিত। যেভাবে আমরা তাঁদের চিনি, এর বাইরেও রয়েছে তাঁদের ভিন্ন জগৎ। আসুন, সেই জগতে ঘুরে এই চেনা মানুষগুলোকেই এবার দেখি একটু অন্য আলোয়--




অভিনয় শুরু করেছি অনেক পরে। তারও অনেক আগে, বয়স যখন ১১ কি ১২, তখন থেকেই ছবি আঁকি। আমার বাবা পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। বাবার একটা শখ ছিল। হাতের কাছে কাগজ-কলম থাকলে কথা বলতেন আর সেই কাগজে ছবি আঁকতেন। পরে আমি মনোযোগ দিয়ে তাঁর আঁকা ছবিগুলো দেখতাম। নিজে নিজে সেগুলো আঁকতে চেষ্টা করতাম। কিছু একটা আঁকতে পারলেই সবাই খুব প্রশংসা করত। বেশ ভালো লাগত সে সময়। এভাবেই আঁকার প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেল।

[caption id="" align="alignnone" width="763"] আফজাল হোসেন, অভিনয়শিল্পী[/caption]


ঘরপালানো আঁকিয়ে

মাধ্যমিক আর উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোলাম। এরপর ভাবলাম আর্ট কলেজে ভর্তি হব। কিন্তু পরিবার থেকে সম্মতি দেয়নি। তবু আমি বদ্ধপরিকর ছিলাম, ছবিই আঁকব। ছবি অাঁকব বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলাম। তারপর মা-বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন, আমি যা চাইছি, তা-ই হবে। ভর্তি হলাম আর্ট কলেজে।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোনোর পর নাটক-থিয়েটার করা শুরু করলাম। অভিনয়েই অনেকটা সময় পার করেছি। ছবি আঁকায় আর তেমন মনোযোগ দিতে পারিনি। এরপর অনেক দিন আর তেমন করে আঁকা হয়ে ওঠেনি।

আফজাল হোসেনের অাঁকা তাঁর নিজের বই পারলে না রুমকি–এর প্রচ্ছদ
আবার আঁকা

এরপর একটা সময় নিজের মধ্যেই একধরনের বেদনাবোধ তৈরি হলো। আক্ষেপ তৈরি হলো, যা একসময় ভালোবেসে করতে চেয়েছি, যার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়েছি, তার সঙ্গে আর যুক্ত নেই আমি। অনেক দূরে সরে গেছি। দীর্ঘ বিরতির পর আবার শুরু করাটা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। কিন্তু আঁকার নেশা মনের মধ্যে ছিল বেশ ভালোভাবেই। তাই আবারও শুরু করেছি।
ছবি আঁকার মতো সৃজনশীল কাজে যেমন পূর্ণ সময় দিতে হয়, সেটা দিতে পারি না। তবু চেষ্টা করছি নিয়মিত ছবি আঁকতে। স্বপ্ন আছে একটি প্রদর্শনী করব। তাহলেই স্বপ্ন পূরণ হবে। মনে হবে, দূরত্ব তৈরি হলেও আবারও ছবি আঁকার সঙ্গে নিজেকে জুড়ে নিতে পারলাম।

কল্পনার ছবি বাস্তবে
ছবি আঁকা নিয়ে যে কথাটা না বললেই নয়, সেটি হচ্ছে, যখন ছবি আঁকি, বেশ উপভোগ করি সময়টা। অনুভব করি ছবির অন্তরের অব্যক্ত কথা। কারণটা বেশ জোরালো। একটা কিছু ভেবে, কল্পনা করে, ছবিটা মনের মধ্যে গেঁথেই তো শিল্পী ছবি আঁকেন। কিন্তু তারপর যখন আসল ছবিটা তার মনে দেখা ছবিটাকে কল্পনার ছবিটাকে ছাড়িয়ে যায়, তখন যে আনন্দ হয়, উত্তেজনা হয়, সেটা অতুলনীয়। ঐশ্বরিক! আসলে ছবি আঁকায় যে একটা অনিশ্চয়তা আছে, কী হবে, কী হবে না, ভালো হবে তো—এ রকম অনিশ্চয়তার জন্যই ছবি আমাকে এত টানে।

আরেক ভুবন
আরেকটা ভুবন আছে আমার—সাহিত্যজগৎ। ছোটবেলা থেকেই লিখতে চেষ্টা করতাম। কোনো বই পড়লেই মনে হতো, আমিও এ রকম লিখব। তারপর যখন চাঁদের হাট করতাম, সমবয়সী লেখকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে লেখার মাধ্যমেই। তবে সেটাও খুব নিয়মিত নয়। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে আমার চারটি উপন্যাস, দুটি কবিতার বই, একটি গল্পের বই ও একটি ভ্রমণকাহিনি প্রকাশ পেয়েছে। আসলে বই প্রকাশ করার কথা কখনো ভাবিিন। আমি লিখি নিজের জন্য। আসলে শুধু লেখা বা ছবি আঁকাই নয়, অভিনয়, উপস্থাপনা বা পরিচালনা, যা-ই করি না কেন, আনন্দ পাই বলেই তো করি।

No comments:

Post a Comment

Thank you very much.