google-site-verification: googlefee13efd94de5649.html সমুদ্র থেকে জেগে উঠছে "এপিকিউয়ন শহর" - তারুণ্যের কন্ঠস্বর

HeadLine

News Update :

Saturday, November 1

সমুদ্র থেকে জেগে উঠছে "এপিকিউয়ন শহর"

হঠাৎই ধেয়ে আসা বন্যার জলে ডুবে গিয়েছিল আস্ত একটা শহর। চলে গিয়েছিল সমুদ্রের গভীরে। সাতাশ বছর পরে জল সরে গিয়ে একটু একটু করে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে আর্জেন্টিনার ‘ভিলা এপিকিউয়েন’-এর ভগ্নস্তূপ। এপিকিউয়েনের জনসংখ্যা এখন এক। হ্যাঁ, বর্তমানে এপিকিউয়েনের একমাত্র বাসিন্দা ৮১ বছরের পাবলো নোভাক। ফিরে গিয়েছেন তাঁর হারানো শহরে। বললেন, “আমি ভাল আছি এখানে। একাই থাকি। খবরের কাগজ পড়ি। নিজের সাইকেলে করে শহরে ঘুরে বেড়াই। আর ৬০-৭০ দশকের সেই স্বর্ণযুগের কথা ভাবি।




রাজধানী বুয়েনস আইরেসের অদূরে হারিয়ে যাওয়া এক সৈকতশহর। এপিকিউয়েন প্রথম গ্রাম থেকে শহরের চেহারা নেয় ১৯২০ সালে। হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। 

আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এর সুবিশাল ‘লেগুন’। সমুদ্রের জল জমির মধ্যে ঢুকে এসে তৈরি হয় এই ধরনের হ্রদ। আর এই হ্রদ প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি একটা পাথরের প্রাচীর আলাদা করে রাখে সমুদ্র থেকে।

এপিকিউয়েনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও ছিল অসাধারণ। বলা হত, ‘চিরবসন্তের শহর’। লেগুনের জলে নুনের পরিমাণ ছিল ‘ডেড সি’-র কাছাকাছি। শোনা যেত, ওই জলে স্নান করলে, মানসিক কষ্ট থেকে ত্বকের রোগ, কিংবা বাত, রক্তাল্পতা, লোকের যাবতীয় অসুখ নাকি নিমেষে সেরে যেত।

প্রতি বছর, কম করে হলেও ২০ হাজার পর্যটক ভিড় করতো এপিকিউয়েন শহরে। স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হয়েছিল অসংখ্য দোকানপাট, হোটেল, রেস্তোরাঁ, রিসর্ট। ছোটবড় প্রায় আড়াইশো ব্যবসা। জনসংখ্যাও ছুঁয়ে ছিল দেড় হাজারের উপর। কিন্তু ১৯৮৫ সালের ১০ নভেম্বর হঠাৎই ধুয়ে মুছে গেল শহরটা।

কী ভাবে?

ঘটনার কিছু দিন আগে বৃষ্টি শুরু হয় এপিকিউয়েনে। ভূবিজ্ঞানীদের ধারণা, একটানা বৃষ্টিতে লেগুনের জল উপচে গিয়েছিল। জলের চাপে ভেঙে যায় প্রাচীর। সমুদ্রের জল দাপিয়ে ঢুকে পরে শহরের বুকে।

নিমেষে ধুয়ে মুছে যায় গোটা শহর। সামান্য সম্বলটুকুও সে দিন নিয়ে যেতে পারেননি বাসিন্দারা। আর তার পর থেকেই ৩০ ফুট জলের নীচে এপিকিউয়েন। এর পিছনে আবার একটা মিথ-ও রয়েছে।

আর্জেন্টিনার লোকের মুখে মুখে ফেরে ঈশ্বর তাঁর প্রেমিকার জন্য এত কেঁদেছিলেন, যে সেই জলে ডুবে গিয়েছিল এপিকিউয়েন। এই শহরে এক সময় ঠিকানা ছিল নর্মা বার্গের।

বললেন, “আমার অনেকগুলো কুকুর আর বিড়াল ছিল। ওই ঘটনার দিন কয়েক আগে ওরা হঠাৎ কোথায় যেন পালিয়ে গেল। আর ওদের দেখতে পাইনি। মনে হয়, ওরা বোধহয় বুঝতে পেরেছিল, সমুদ্রের জল বাড়ছে।”

দীর্ঘ সাতাশ বছর পরে সমুদ্রের জল সরে গিয়ে এখন জেগে উঠছে এপিকিউয়েন। এখনও সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সাজানো ঘর-গেরস্থালির ভাঙাচোরা চিহ্ন। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ধ্বংসস্তূপ।

ভেঙে যাওয়া বাড়িঘর, বিছানাপত্র। কোথাও পড়ে পানীয়ের বোতল, রিসর্টের ভাঙা দেওয়াল। মরচে ধরে যাওয়া গাড়ির ইঞ্জিন। গির্জায় যিশুর নুনের প্রলেপ পড়া মূর্তি। কোথাও আবার স্পষ্ট রাস্তা এঁকে বেঁকে চলে গিয়েছে একটা প্রাণহীন শহরের ধার দিয়ে। তবে একেবারে প্রাণহীন বলা ভুল হবে।



লিখেছেন::Megh Balika




No comments:

Post a Comment

Thank you very much.