google-site-verification: googlefee13efd94de5649.html রোল নম্বর ওয়ান - তারুণ্যের কন্ঠস্বর

HeadLine

News Update :

Sunday, November 9

রোল নম্বর ওয়ান

টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে পুরোনো একটা গল্প প্রচলিত আছে। জার্মানিতে একবার টেস্ট খেলার আয়োজন করা হলো। টানা কয়েক দিন সকাল-সন্ধ্যা খেলার পর ম্যাচের ফলাফল ড্র। হিটলার খবরটা শুনে গেলেন চটে। এ আবার কেমন খেলা রে বাবা! এত দিন দৌড়েও খেলার কোনো ফলাফল নেই! ফাজলামো নাকি! এই দেশে এমন ফালতু খেলা যেন আর মাঠে না গড়ায়! হিটলারের আদেশ বলে কথা! জার্মানিতে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে গেল সেই থেকে।


কিন্তু আমাদের হাতে অনেক সময়। অন্যের কাজ দেখাও আমাদের জন্য বিরাট কাজ। তাই আমরা টেস্ট খেলি। আরও বেশি খেলতে চাই, এমনকি কড়া রোদের মধ্যে গ্যালারিতে সারা দিন বসে থাকতেও আমাদের আপত্তি নেই। রাজনৈতিক দলগুলোও এই টেস্ট ম্যাচের দারুণ ভক্ত! সারা সপ্তাহ হরতাল ডেকে ক্রিকেটপ্রেমী তরুণদের আরামে খেলা দেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তারা। ক্রিকেটের জন্য তাদের সে কী দরদ! টেস্টে আমরা সব সময় জিতি না, ইচ্ছে করেই জিতি না। সব সময় জিতলে তো ডাল-ভাত হয়ে যাবে। তার চেয়ে কোরমা–পোলাও মাঝে মাঝে খাওয়াই ভালো। আর সব সময় জিতলে তো আমরা অস্ট্রেলিয়া হয়ে গেলাম!
তবে ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন আবার কেমন জানি! সব সময় জান-প্রাণ দিয়ে খেলেন! অতিরিক্ত সিরিয়াস টাইপের আরকি! তাক লাগানো পারফরম্যান্স করে বিশ্ব র্যা ঙ্কিংয়ের এক নম্বর আসনটাও চলে যায় তাঁর দখলে। ফলে দেশ–বিদেশে তাঁর অনেক নাম–ডাক। দুর্নীতি ছাড়া আর কোথাও আমাদের রোল নম্বর এক হয় না। এই ক্রিকেটার ভদ্রলোক সেই চিরাচরিত রেকর্ডটাও ভেঙে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বিষয়টা অবশ্য অনেকেই ঠিক হজম করতে পারেন না!
হজম হয় না বলে তখন তাঁরা সেই ক্রিকেটারকে ‘কড়া নজরদারিতে’ রাখেন। ঘাড় বাঁকা করে একটা মশা মারলেও তাঁর দোষ! দোষের সন্ধান পেলেই আবার বসে যায় আন্তর্জাতিক মানের ম্যারাথন মিটিং। মিটিংয়ে উপস্থিত রথী–মহারথীদের সিদ্ধান্তগুলো হয় ভীষণ সৃজনশীল! তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ, ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ, এক লাখ টাকা জরিমানা, টিভিতে মুখ দেখানো নিষিদ্ধ, অমুকের সঙ্গে কথা বলা নিষেধ, তমুকের সঙ্গে বসায় মানা! আরও কত কী!
অনেক দিন ধরে যাঁদের মন খারাপ ছিল তাঁরাও অমন সিদ্ধান্তে হাসতে হাসতে সুস্থ হয়ে ওঠেন! রস+আলোর চাহিদা পর্যন্ত কমে যায়। আর মিটিংয়ের রথী–মহারথীরা মনে মনে বলেন, ‘ব্যাটার ভাব বাড়ছিল বেশি, এবার দেখায় দিলাম!’
তবে অমন সিদ্ধান্তে সেই ক্রিকেটার অবশ্য ঘরে বসে পপকর্ন (চলতি ভাষায় পাপন ভাজা) খেতে খেতে সিনেমা দেখেন! ঘরে বসে থাকতে থাকতে তাঁর গায়ের রং হয় আরও ফরসা, উজ্জ্বল!
তারপর নিষেধাজ্ঞা শেষে একদিন মাঠের ছেলে মাঠে ফিরে আসেন। ফিরেই বসে যান কঠিন পরীক্ষায়। পরীক্ষার ফলাফল—সেই তিনিই রোল নম্বর ওয়ান, তা–ও আবার সারা বিশ্বের মধ্যে! তাঁর রেজাল্ট দেখে আমরা ঘরে বসে আরাম করে ‘পাপন ভাজা’ খাই! জিনিসটা বড়ই কুড়মুড়ে, সুস্বাদু!

সূত্রঃ Prothom Alo

No comments:

Post a Comment

Thank you very much.