google-site-verification: googlefee13efd94de5649.html রাজ্জাকের চোখে স্বপ্ন সারথিরা - তারুণ্যের কন্ঠস্বর

HeadLine

News Update :

Wednesday, February 4

রাজ্জাকের চোখে স্বপ্ন সারথিরা

ফিনিশার নাসিরকে দেখুক বিশ্বকাপ

আবদুর রাজ্জাকতিনি দলে নেই, তবে দলের সঙ্গেই আছেন। যে দলের অপরিহার্য অংশ হয়ে ছিলেন এত দিন, সেই সম্পর্ক তো এখনই শেষ হওয়ার নয়! জাতীয় দল আর ঘরোয়া ক্রিকেট মিলিয়ে বিশ্বকাপ দলের সবাইকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলের ১৫ ক্রিকেটারকে নিয়ে আবদুর রাজ্জাকের ধারাবাহিক লেখা
বিশ্বকাপ দল ঘোষণার আগে হয়তো সবচেয়ে বেশি আলোচনা ছিল আমার আর নাসিরের থাকা না-থাকা নিয়ে। দল ঘোষণার পর পরও তাই। নিজের কথা এখানে বলতে চাই না। তবে নাসিরকে দেখে আমি দারুণ খুশি হয়েছি। রিয়াদের ক্ষেত্রেও আমি লিখেছি, অভিজ্ঞতা কেনা যায় না। নাসির হয়তো অতটা অভিজ্ঞ নয়। তবে কয়েক বছর ধরেই তো খেলছে। তার চেয়ে বড় কথা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য পেয়েছে। বড় দলের বিপক্ষে, চাপের মধ্যে কীভাবে সফল হতে হয়, সেটা ও জানে। বিশ্বকাপের মতো আসরে এমন ক্রিকেটারের খুব প্রয়োজন।


নাসিরের খারাপ সময়টা নিয়েও অনেক কথা হয়েছে। অনেকে অনেক কারণ বের করেছে। আমি মনে করি, খারাপ সময়টা ছিল স্রেফ ক্রিকেটীয় ব্যাড প্যাচ। সব ক্রিকেটারেরই সেটা আসে। হ্যঁা, খারাপ সময়ে অনেক টেকনিক্যাল খুঁত চোখে পড়ে অনেকের। কিন্তু অনেকেই ভুলে যায়, ওই তথাকথিত খুঁত নিয়েই সে সফল হয়েছে আগে! নাসির কিন্তু ওর মতো খেলেই আবার ফর্মে ফিরেছে। টেকনিক্যাল কোনো কাজ করে থাকতে পারে, কিন্তু তেমন কিছু চোখে পড়েনি। বড় কোনো পরিবর্তন আনেনি, সেটা নিশ্চিত। হতে পারে, টেকনিক্যালি নিখুঁত নয় বলে হয়তো খারাপ সময় একটু দীর্ঘ হয়েছে। চারপাশে এসব নিয়ে অনেক কথা হয় বলে মাথায় সেগুলো কাজ করে। কাজ তখন আরও কঠিন হয়ে ওঠে।নাসির হোসেন। অঙ্কন: মাসুক হেলাল
নাসিরও ওই চাপটা অনুভব করেছে। মনে আছে আমার, একদিন ড্রেসিং রুমে আমাকে বলেছিল, ‘রাজ ভাই, কি হচ্ছে এসব বলুন তো? যাই করি, যত কিছু চেষ্টা করি, কিছুই তো ঠিক হয় না।’ ওকে তখন সাহস দিয়েছি। রিয়াদের মতো নাসিরও শুরুর দিকে একটু তাড়াহুড়ো করেছে ফর্মে ফিরতে। ক্রমাগত খারাপ করার পর হয়তো দল থেকে বাদ পড়ার ভয় চেপে বসেছিল। সেটাও পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। সেই সময় ওর বক্তিগত জীবন নিয়েও অনেক কথা হয়েছে। এই ব্যাপারটি আমার কাছে খুবই খারাপ লাগে। কারও পেশাদারি জীবন আর ব্যক্তিগত জীবন এক করে দেখা ঠিক নয়। আর খারাপ সময়ে এসব নিয়ে কথা হলে সেটা ক্রিকেটারের জন্য খুব ভালো কিছু হয় না। বরং খারাপ সময়ে সমর্থন আরও বেশি প্রয়োজন। যাই হোক, বাদ পড়ার পর খোলামনে খেলেছে ঢাকা লিগে। রানে থাকার মাঝেই ওকে ফেরানোয় খুব ভালো হয়েছে। ঢাকা লিগের চেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা বিশ্বকাপ অনেক কঠিন অবশ্যই। কিন্তু যেকোনো পর্যায়েই অনেক রান করলে আত্মবিশ্বাস থাকে। ক্রিকেটে আত্মবিশ্বাস অনেক সময় জাদুর মতো কাজ করে।
নাসির যে এভাবে এত ভালো ব্যাটসম্যান হয়ে উঠবে, শুরুর সময় আমি ভাবতেও পারিনি। আমার ধারণা, আরও অনেকেও এটা ভাবতে পারেনি। একসময় নাসিরের ব্যাটিংয়ের চেয়ে বোলিং বেশি ভালো ছিল। সাত-আটে ব্যাটিং করত, বোলিং করত পুরো। ঢাকা লিগে অনেক ম্যাচে বোলিং ওপেনও করেছে। এমনকি জাতীয় দলে ঢোকার সময়ও মূলত অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবেই ঢুকেছে। ফিল্ডিং ভালো করত, এটা আরেকটা বড় কারণ ছিল ওকে নেওয়ার। অনেক ক্রিকেটারই আছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে নিজের সেরাটা দেখায়। নাসিরও সেই দলে। খেলতে খেলতেই দ্রুত উন্নতি করেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওর ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে অবাক হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু নাসির আমাদের অবাক হওয়ার সময়ও দেয়নি। এসেই এমন খেলতে শুরু করল যে ভালো করাটা প্রত্যাশিতই হয়ে গেল। দ্রুতই হয়ে উঠল আমাদের ফিনিশার।
বিশ্বকাপেও আশা করি নাসিরের সেরাটা দেখা যাবে। অনেক ভালো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে রান পেয়েছে ও। অনেক কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে বাঁচিয়েছে, জয় এনে দিয়েছে। যদিও একাদশে ঢোকা কঠিন, অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। কিন্তু অভিজ্ঞতার কারণেই ওকে দেখতে চাই আমি একাদশে। যদি সুযোগ পায়, আমি চাইব ঢাকা লিগের মতোই চাপহীন ভাবে খেলুক। খারাপ করার ভয় যেন না করে। খারাপ সময়টা তো দেখেই ফেলেছে। হারাবার ভয় তাই না করুক।
খোলামন নিয়ে যদি খেলতে পারে, বিশ্বকাপ দেখবে সেই ফিনিশার নাসিরকে।














সংগ্রহঃ প্রথম আলো
Live your Life, Live your Dream.

1 comment:

Thank you very much.