google-site-verification: googlefee13efd94de5649.html মেসি-নেইমারে উড়ে গেল বায়ার্ন - তারুণ্যের কন্ঠস্বর

HeadLine

News Update :

Thursday, May 7

মেসি-নেইমারে উড়ে গেল বায়ার্ন

বার্সেলোনা-বায়ার্ন মিউনিখ ম্যাচের খণ্ডচিত্র

বার্সেলোনা-বায়ার্ন মিউনিখ ম্যাচের খণ্ডচিত্র



ক্রীড়া ডেস্ক : ছন্দে থাকলে লিওনেল মেসিকে আটকানো অসম্ভব- ম্যাচের আগের দিন এমন কথা স্বয়ং বায়ার্ন মিউনিখ কোচ পেপ গার্দিওলাই বলেছিলেন। এবার মাঠে সেটা দেখিয়েও দিলেন ফুটবলের খুদে জাদুকর। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে বার্সেলোনার সেরা তারকা করলেন জোড়া গোল, সঙ্গে নেইমার একটি। আর তাতেই উড়ে গেল পেপ গার্দিওলার দল।

ন্যু ক্যাম্পে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বায়ার্নকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল বার্সা। সেই সঙ্গে ২০১২-১৩ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে বায়ার্নের কাছে ন্যু ক্যাম্পে হারের প্রতিশোধও নিল কাতালানরা। ১৩ মে বায়ার্নের মাঠে ফিরতি লেগ জিততে পারলে ২০১২-১৩ মৌসুমে দুই লেগ হারের মধুর প্রতিশোধও নেওয়া হবে স্প্যানিশ জায়ান্টদের। তবে বায়ার্নের মাঠে ড্র করলেই ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হয়ে যাবে লুইস এনরিকের দলের।

বুধবার ন্যু ক্যাম্পে পুরো ম্যাচই ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। শুরু থেকে আক্রমণ আর পাল্টা-আক্রমণে রং ছড়ায় দুই দল। ম্যাচের ১২ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত বার্সা। কিন্তু গোলের একটি সুযোগ নষ্ট করেন লুইস সুয়ারেজ। মাঝ মাঠ থেকে সুয়ারেজকে ক্রস দেন নেইমার। দ্রুত বল টেনে নিয়ে গিয়েও বায়ার্ন গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যুয়ারকে ফাঁকি দিতে পারেননি উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। ডান পা দিয়ে দারুণ দক্ষতায় সুয়ারেজের শট ঠেকিয়ে দেন ন্যুয়ার। ১৫ মিনিটে আরেকটি সুযোগ এসেছিল বার্সার সামনে। বক্সের ভেতর নেইমারকে বল বাড়ান সুয়ারেজ। ব্রাজিল তারকা পায়ের টোকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু জার্মানির এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বলটি প্রতিহত হয়।

১৮ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত বায়ার্নও। কিন্তু দলকে এগিয়ে দেওয়ার সবচেয়ে সহজ সুযোগ মিস করেন রবার্তো লেভানডোস্কি। বক্সের ডানদিক থেকে তাকে পাস দেন থমাস মুলার। বলে ঠিকমতো পা লাগালেই জালে জড়িয়ে যেত। কিন্তু পারেননি লেভানডোস্কি। ২১ মিনিটে মেসির একটি বাঁকানো ক্রস পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ২৬ মিনিটে মেসি ও সুয়ারেজের যৌথ প্রচেষ্টা রুখে দেন বায়ার্নের ডিফেন্ডাররা। পরের মিনিটে সুয়ারেজের একটি হেড ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে যায়।

৩৫ মিনিটে বক্সের সামনে মেসিকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন বায়ার্নের জাভি আলোনসো। ফ্রি-কিক নেন মেসি নিজেই। তবে আর্জেন্টাইন তারকার শট ধরে ফেলেন ন্যুয়ার। ৩৯ মিনিটে আবারও বার্সাকে গোলবঞ্চিত করেন বায়ার্ন গোলরক্ষক। ডি বক্সের সামনে থেকে দানি আলভেজকে ক্রস দেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। বুক দিয়ে বল নামিয়ে শট নিয়েছিলনে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার আলভেজ। তবে আবারও পা দিয়ে তা প্রতিহত করেন ন্যুয়ার। ফলে প্রথমার্ধে গোলশূন্য স্কোর লাইন নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলার শুরুতেই নিজেদের বক্সের সামনে লেভানডোস্কিকে টেনে ধরে ফেলে দেন আলভেজ। ফলে বার্সা ডিফেন্ডারকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। অবশ্য ফ্রি-কিকে বার্সার রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে পারেননি আলোনসো। ৫৮ মিনিটে আক্রমণে যায় বার্সা। বক্সের সামনে থেকে নেইমারের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে জোরালো এক শট নেন মেসি। তবে বলটি ধরে ফেলেন ন্যুয়ার। ৬০ মিনিটে আরেকটি সুযোগ আসে বার্সার সামনে। নেইমারকে দারুণ এক ক্রস দেন মেসি। তবে ডি বক্সের অনেকটা ওপরে উঠে এসে তা প্রতিহত করেন বায়ার্ন গোলরক্ষক।

৬৪ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ তৈরি হয়েছিল বার্সার সামনে। বক্সের ভেতর নেইমারকে পাস দেন ইভান রাকিটিচ। তবে বল ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে মারেন ব্রাজিল অধিনায়ক। ৭২ মিনিটে বায়ার্নের এক খেলোয়াড়ের শট ইনিয়েস্তার পায়ে লেগে পোস্টের দিকে গেলে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ধরে ফেলেন বার্সা গোলরক্ষক টের স্টেগেন। ৭৫ মিনিটে বায়ার্নের আরেকটি প্রচেষ্টা রুখে দেন বার্সার ডিফেন্ডাররা।

একসময় মনে হচ্ছিল, গোলশূন্য ড্রই বুঝি হতে যাচ্ছে ম্যাচটি। তবে ৭৭  মিনিটে দারুণ এক গোলে বার্সাকে এগিয়ে দেন মেসি। বক্সের সামনে মেসিকে পাস দেন আলভেজ। সেখান থেকেই জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন চারবারের ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় মেসি। এই গোলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ছুঁয়ে ফেলেন মেসি। টুর্নামেন্টে দুজনেরই গোলসংখ্যা হয় ৭৬টি করে।

প্রথম গোলের তিন মিনিট পরেই আরেকটি অসাধারণ গোলে বার্সার ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। বক্সের সামনে মেসিকে পাস দেন রাকিটিচ। দ্রুত বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে বায়ার্নের এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ন্যুয়ারের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন আর্জেন্টাইন তারকা। এই গোলের মাধ্যমে রোনালদোকে ছাড়িয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডটি নিজের করে নেন মেসি। ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই টুর্নামেন্টে মেসির গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৭৭টি।

ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে স্কোরলাইন ৩-০ করেন নেইমার। এই গোলেও অবদান মেসির। আর্জেন্টাইন তারকার পাস থেকে বল পেয়ে মাঝ মাঠ থেকে বল টেনে নিয়ে গিয়ে বায়ার্ন গোলরক্ষককে ফাঁকি দেন ব্রাজিল তারকা। সঙ্গে সঙ্গে জয়ের উৎসবে মেতে ওঠে পুরো ন্যু ক্যাম্প। আর ৩-০ গোলের জয় নিয়ে ফাইনালের পথে এগিয়ে যায় বার্সা। 

No comments:

Post a Comment

Thank you very much.