google-site-verification: googlefee13efd94de5649.html আসুন জানা যাক কিছু ‘নিষিদ্ধ বই’ এর কথা - তারুণ্যের কন্ঠস্বর

HeadLine

News Update :

Wednesday, January 6

আসুন জানা যাক কিছু ‘নিষিদ্ধ বই’ এর কথা

পৃথিবীর ইতিহাসে যুগে যুগে নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকা হয়েছে দীর্ঘ। বই নিষিদ্ধ হওয়ার পর অনেক বই হয়েছে বিখ্যাত। কিছু বইয়ের জন্য লেখকদের যেতে হয়েছে নানা রকম প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে। কোন কোন লেখককে দাঁড়াতে হয়েছে কোর্টে, মামলা চালাতে হয়েছে দিনের পর দিন, ছাড়তে হয়েছে দেশ, ভিটে-মাটি। আসুন জানা যাক এমন কিছু ‘নিষিদ্ধ বই’ এর কথা।
পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বকালে বিতর্কিত যত ‘নিষিদ্ধ বই’
উইলিয়াম টেইন্ডাল অনূদিত 'বাইবেল':
জেনে অবাক হবেন যে, অশ্লীলতার দায়ে প্রথম নিষিদ্ধ হয় যে বইটি সেটি ‘পবিত্র বাইবেল’। ইংল্যান্ড থেকে প্রকাশিত উইলিয়াম টেইন্ডাল অনূদিত বাইবেল নিষিদ্ধ করেন তৎকালীন রাজা অষ্টম হেনরি। অষ্টম হেনরি নিজের জীবনের বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে বিস্তর ঝামেলায় পড়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন কোথাও যেন বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা না হয়। ফলে বাইবেলের বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা তিনি নিতে পারেননি। পরিশেষে পুড়িয়ে ফেলা হয় অনূদিত বাইবেলের ছ’হাজার কপি। শুধু তাই নয়, প্রাণে বাঁচতে টেইন্ডালকে করতে হয়েছিলো দেশত্যাগ। বর্তমানে সেই অনূদিত বাইবেলটিই পুরো বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মানুসারি মানুষ অনুসরণ করছে।
গ্যালিলিওগ্যালিলি রচিত ‘বিশ্ববিধান সম্পর্কে কথোপকথন’:
চার্চের ধর্মগুরুদের ধারণা ছিল পৃথিবী স্থির এবং অন্যসব গ্রহ নক্ষত্র পৃথিবীকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু গ্যালিলিও তাঁর ‘বিশ্ববিধান সম্পর্কে কথোপকথন’ গ্রন্থে বললেন: পৃথিবী সহ অন্যসব গ্রহ নক্ষত্র সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। চরম সত্য কথাটি চার্চের বিরুদ্ধে চলে যায়। পরবর্তীতে ক্ষুব্ধ পোপ অনির্দিষ্টকালের জন্য গ্যালিলিওকে বন্দী করার নির্দেশ দেন। ১৬৪২ সালে গ্যালিলিওর বন্দী অবস্থায় মৃত্যু হয়। তবে বন্দী দশা থেকে এক কপি চালান করে ছিলেন স্ট্রসবুর্গ-এ; যা পরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। গ্যালিলিওর সেই বিশ্ববিধান জোর্তিবিদ্যার আমূল বদলে দিয়েছে।
অব্রে মেনেন-এর ‘দ্য রামায়াণ অ্যাজ টোল্ড:
“দ্য রামায়ানা অ্যাজ টোল্ড বাই অব্রে মেনেন” (The Ramayana as Told by Aubrey Menen) নিষিদ্ধ ঘোষিত আরেকটি ধর্মীয় গ্রন্থ। আধুনিক আঙ্গিকে রামায়ণকে ব্যাখ্যা করায় গ্রন্থটি নিষিদ্ধ করা হয়। দেব দেবীকে মানবরূপে উপস্থাপনের কারণে ভারত সরকার গ্রন্থটি ১৯৫৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
মার্ক টোয়েন’র 'দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব হাকলবেরিফিন':
মার্ক টোয়েন রচিত সুখপাঠ্য এই কিশোর উপন্যাসটি ভাষার অজুহাত দেখিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৮৮৪ সালে প্রকাশিত এ বইয়ের শ্বেতাঙ্গ হাকলবেরির সাথে কালো জিমের বন্ধুত্বের গল্প বর্ণান্ধতার কারণে মেনে নিতে পারেনি শ্বেতঙ্গ শাসকেরা। বর্তমান বিশ্বে ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার অব হাকলবেরি ফিন’খুবি জনপ্রিয়।
হেরিয়েট বিচার স্টো-এর আঙ্কেল টম’স কেবিন:
দাসপ্রথার বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানে হেরিয়েট বিচার স্টো রচিত ‘‘আঙ্কেল টম’স কেবিন’’ উপন্যাসটি। দাসত্ববিরোধী উপাদান থাকায় কনফেডারেট স্টেটস-এ বইটি নিষিদ্ধ করা হয়। ১৮৫২ সালে বইটি রাশিয়াতেও নিষিদ্ধ করা হয় এর ‘সাম্যবাদী’ তত্ত্বের কারণে।
জেমস জয়েস এর 'ইউলিসিস':
জেমস জয়েস (James Joyce) ১৯০৪ সালের জুন মাসে মাত্র ১৮ ঘন্টার ঘটনা (সকাল ৮টা থেকে বিকাল ২টা) নিয়ে ‘ইউলিসিস’ উপন্যাসটি লিখেন । উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়ার পর অশ্লীলতার অভিযোগে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। পুড়িয়ে ফেলা হয় উপন্যাসটির ৪৯৯ কপি। বইটি কেবল উপন্যাস নয় জীবন্ত ইতিহাসও বটে। বর্তমানে উইলিসিস সেরা উপন্যাসগুলোর মধ্যে একটি।
জর্জ অরওয়েল রচিত ‘এনিমেল ফার্ম':
জর্জ অরওয়েলের ‘এনিমেল ফার্ম অ্যা ফেয়রি টেল’ বইটি মূলত সাংকেতিক উপন্যাস। এ উপন্যাসে রাশিয়ার স্টালিন যুগের ভয়াবহতাকে তুলে ধরা হয়েছিল। বইটি রাশিয়ায় নিষিদ্ধ হয়। ১৯৯১ সালে কেনিয়ায় নিষিদ্ধ করা হয় ‘এনিমেল ফার্ম’ অবলম্বনে তৈরি নাটক, কারণ এটিতে দুর্নীতিপরায়ণ নেতাদের ব্যাঙ্গ করা হয়। ২০০২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্কুলগুলোতে নিষিদ্ধ হয় এই বই ছবি সংবলিত হওয়ায়, বিশেষ করে শুকরের কথা বলতে পারার বিষয়টির কারণে। বইটি এখনো দক্ষিণ কোরিয়া ও কিউবায় নিষিদ্ধ।

No comments:

Post a Comment

Thank you very much.